স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে নৃশংসভাবে খুন হতে হয়েছে নিক্কি ভাটিকে। অভিযোগ, বেধড়ক মারধর করে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে তরুণীকে। প্রশ্ন হল কেন নিক্কিকে এভাবে মরতে হল? ওই একই বাড়িতে বিপিনের দাদা রোহিতের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল নিক্কির দিদি কাঞ্চনের। বোনের মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়াতেই মুখ খুলেছেন নিক্কির দিদি কাঞ্চন। জানিয়েছেন, কীভাবে এবং কেন তার বোনকে এভাবে মেরেছে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
কাঞ্চন জানিয়েছে, স্বামীর প্রবল অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ফেব্রুয়ারি মাসে দাদরিতে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিল নিক্কি। কিন্তু সেখানে হাজির হয় বিপিন। বিবাদ মীমাংসার জন্য বসে পঞ্চায়েত। সেখানে সকলের সামনে ক্ষমা চেয়ে নেন বিপিন। জানান, ভবিষ্যতে স্ত্রীর উপর আর কখনও এ ধরনের অত্যাচার করবেন না। নিক্কির মনে হয়েছিল, বিপিন হয়তো পাল্টে গিয়েছে। তাই সে শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসে। কিন্তু কয়েকদিন পর ফের স্বমূর্তি ধারণ করে বিপিন। কাঞ্চন আরও জানিয়েছেন, তিনি এবং বোন নিক্কি একসঙ্গে একটি সালোঁ চালাতেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা একেবারেই পছন্দ করত না। নিক্কির শখ ছিল রিল বানানো এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা। যা নিয়ে বিপিনের চরম আপত্তি ছিল। বিপিন এবং তার মা, বাবার একমাত্র দাবি ছিল টাকা। বাপের বাড়ি থেকে আরও টাকা আনার জন্য নিক্কিকে চাপ দেওয়া হত। যদিও বিয়েতে নিক্কির বাবা তাঁর জামাই বিপিনকে একটি স্করপিও গাড়ি, একটি রয়্যাল এনফিল্ড বাইক প্রচুর পরিমাণ গয়না এবং নগদ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও পণের দাবিতে অত্যাচার থামেনি।
গত বৃহস্পতিবার এই পণ নিয়েই নিক্কির সঙ্গে তার স্বামী বিপিন ও শ্বশুর, শাশুড়ির তীব্র কথা কাটাকাটি হয়। সে সময় তিনজনে মিলে নিক্কিকে মারধর করে। এরপর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।
কাঞ্চন ইনস্টাগ্রাম রিলে আরও জানিয়েছেন, তাঁর বোনের একটি বছর সাতেকের ছেলে আছে। সেই ছেলের মুখের দিকে তাকিয়েই সব অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করছিল তার বোন। নিক্কি ভেবেছিল হয়তো এই সমস্যা আজ বা কাল ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা কেউই বুঝিনি যে পরিস্থিতি এমন মর্মান্তিক হবে। তাঁর দাবি, এখন মনে হচ্ছে ফেব্রুয়ারি মাসেই বিপিন ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমরা সামাজিক সম্মানের কথা মাথায় রেখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসি। কাঞ্চনের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। তদন্তে নেমে বিপিন, তার বাবা ও মা এবং এক ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন কাঞ্চন এবং তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন।
Leave a comment
Leave a comment