অবিরাম বর্ষণে হিমাচল প্রদেশের কুলুতে বিয়াস নদীর প্লাবনে ডুবে গিয়েছে মানালি যাওয়ার প্রধান টোলপ্লাজা। এর ফলে চণ্ডীগড়-মানালি জাতীয় সড়কে তৃতীয় দিনের মতো আটকে রয়েছে শতাধিক গাড়ি, ট্রাক ও যাত্রীবাহী গাড়ি। অবিরাম বৃষ্টিতে একের পর এক ধস নেমে সড়কের বড় বড় অংশ ভেসে গিয়েছে, ব্যস্ত জাতীয় সড়ক পরিণত হয়েছে তীব্র স্রোতের নদীতে। এই জাতীয় সড়কই কুলু-মানালির মানুষের এবং পর্যটকদের জীবনরেখা। কিন্তু এখন একাধিক জায়গায় রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়ায় যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আঞ্চলিক ইঞ্জিনিয়ার অশোক চৌহান জানিয়েছেন, বিয়াস নদীর প্রবল স্রোত কুলু-মানালি অংশের বহু জায়গায় রাস্তার ক্ষতি করেছে। উদ্ধার ও মেরামতির কাজ চলছে, তবে ২০০ মিটারের বেশি অংশ সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। বানালা এলাকায় বড় ধস নামার ফলে প্রশাসন পুরো সড়ক বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। ধসের সঙ্গে বন্যার জলে ভেসে গেছে আশপাশের ধাবা, রেস্তোরাঁ ও দোকানপাটও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পরিস্থিতি ভয়াবহ। একজন গ্রামবাসী বলেন, “মানালির বিভিন্ন জায়গায় মেঘভাঙা বৃষ্টিতে হঠাৎ জলস্তর বেড়ে যায়। অনেক পরিবার আজ জীবন নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে। যখন জল ঢুকে পড়ল, আমরা সবাই উঁচু জায়গায় উঠে যাই। এখন সঠিক পানীয় জলও নেই, ব্যবসা-বাণিজ্য সব বন্ধ।”
অন্য এক বাসিন্দা বলেন “এখন আপেলের মরশুম চলছে। কিন্তু আবহাওয়ার কারণে সব ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যদি এই পরিস্থিতি চলতে থাকে, তাহলে আমাদের ভয়ানক আর্থিক ক্ষতি হবে।” কুলুর এক পর্যটক জানান, “আমি রিসর্টে ছিলাম, তখন হঠাৎ মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে জলের স্তর দ্রুত বেড়ে যায়।”
সরকারি হিসাবে, টানা বৃষ্টিতে হিমাচল প্রদেশের বহু জায়গায় দোকান ভেসে গেছে, বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে, জাতীয় সড়ক আড়াআড়ি বিভক্ত, গ্রাম ও শহরে ঢুকে পড়েছে বন্যার জল। জুনের ২০ তারিখ থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে বর্ষাজনিত ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১৫৮ জনের, এখনও ৩৮ জন নিখোঁজ।