বাংলাদেশে এখনও ভোটের ঘোষণা না হলেও আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের মনে কোন সমীকরণ কাজ করবে তা নিয়ে চিন্তিত মূলধারার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ইতিমধ্যেই শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু এতেও আওয়ামী লীগের অন্যভাবে ফিরে আসার ভয় যাচ্ছে না বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে। হাসিনার দলের সহযোগী জাতীয় পার্টিকেও তাঁর দলের মতো ভোটের ময়দান থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক, এমনটাই চাইছে জামায়াতে ইসলামি, এনসিপি সহ বিভিন্ন দল। ভোটের রোডম্যাপ নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এমনটাই দাবি তুলেছেন এই দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী রবিবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যমুনায় বৈঠক শেষে তারা এই দাবির কথা বলেন। তাঁদের বক্তব্য, “জাতীয় পার্টির ব্যাপারে সুস্পষ্ট করে বলেছি, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল জাতীয় পার্টি। যেভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তেমনিভাবে জাতীয় পার্টিকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে।”
এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জাতীয় পার্টির কোনও অধিকার নেই বাংলাদেশে রাজনীতি করার। তাদের অভিযোগ, হাসিনার সময়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে অবৈধ নির্বাচনকেই বৈধতা দিয়েছিল ওই দল।
রবিবার মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর এনসিপির তরফে সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয় যে গত ৩টি অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দিতে জাতীয় পার্টি অংশ নিয়েছিল। তাদের পোস্টারেও আওয়ামী মনোনীত প্রার্থী লেখা ছিল। আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির মধ্যে পার্থক্য নেই। তাই জাতীয় পার্টির কার্যক্রম স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে এনসিপি।
গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গী হওয়ার জেরে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক সংকটে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় পার্টি। শেখ হাসিনার দলের সঙ্গেই তাদের উপরও নেমে এসেছে নানা নিষেধাজ্ঞা। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে থাকা অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। পাশাপাশি আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলেও কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন তিনি।
জি এম কাদেরের আরও অভিযোগ, শেখ হাসিনা জামায়াতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ করেছিল। তখন যদি তা অন্যায় হয় এখনও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করাটা সেই অন্যায় কাজের মধ্যেই পড়ে। তবে এইসব যুক্তি মানতে নারাজ আজকের বাংলাদেশ। অন্যের ঘাড়ে ভর করে ফিরতে পারে হাসিনার দল, এমন ভয় পাচ্ছে অনেকেই। এই মুহূর্তে জাতীয় পার্টির মধ্যে আওয়ামী লীগের জুজু দেখছে বাংলাদেশ।
