ক্যানসার নামটা শুনলেই শিরদাঁড়া দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত নেমে যায়, কেননা এই মুহূর্তে ক্যানসারের কোনও পুরোপুরি নিরাময় যোগ্য ট্রিটমেন্ট নেই। তবে এখানে প্রতিরোধের ক্ষেত্রে আশার আলো দেখাচ্ছে গ্লুকোজ। শুধুমাত্র শরীরে এনার্জি সরবরাহ করাই নয়, এর ভূমিকা আরও ব্যাপক। সম্প্রতি ভ্যান ক্যান্ডেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট -এর হওয়া একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে গ্লুকোজ শুধুমাত্র মানব শরীরে পুষ্টি সরবরাহ করে তাই নয়, ক্যানসারের বিরুদ্ধে শরীরে লড়াই করা টি সেলের ইমিউনিটি তথা অনাক্রম্যতা বাড়াতে সাহায্য করে গ্লুকোজ । কয়েকদিন আগে সেল মেটাবলিজম নামক একটি মেডিকেল সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণামূলক একটি নিবন্ধকে অনুসরণ করে বলা যায় গ্লুকোজ টি সেল-এর কার্যকারিতা এতটাই বৃদ্ধি করে যে তা ক্যানসারের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী হয়ে লড়াই করতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসকরা বিশ্বাস করতেন মানব শরীরে টি সেলের জন্য এনার্জি সরবরাহ করে গ্লুকোজ। এই সমীক্ষার শীর্ষ গবেষক জোসেফ লিঙ্গ জানান আমরা এখনও এর পুরো রসায়নটা বুঝতে পারিনি যে গ্লুকোজ কীভাবে কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে টি সেলের, তবে গ্লুকোজের খানিকটা অংশ টি সেল-এর মধ্যে ঢুকে জিএসএলএস নামক একটি যৌগ তৈরি করে যা ফ্যাট ও শর্করার সমন্বয়ে তৈরি । এই যৌগটি সেল-এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে ক্যানসারের বিরুদ্ধে গড়ে তোলে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ। টি সেলের মধ্যে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণ জিএসএলএস এমনভাবে কাজ করে যার ফলে টিউমার কোষগুলি ধ্বংস হয়ে যায় আর বলাই বাহুল্য এগুলি ম্যালিগন্যান্ট কোষ। মানে যেখান থেকে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । এখন কারও শরীরে যদি এই যৌগটি কম থাকে তাহলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে । তখন টি সেল ক্যানসারের বিরুদ্ধে আর অতটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে না।
এই গবেষণার বরিষ্ঠ গবেষক রাসেল জোন্স মনে করেন এই ধরনের সমীক্ষা ক্যানসারের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন থেরাপিকে বিশেষ করে ইমিউনোথেরাপিকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করবে।
তবে গ্লুকোজ সংক্রান্ত ও ক্যানসার প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরী।
Leave a comment
Leave a comment
