তামিলনাডুর কারুরে অভিনেতা ও তামিলাগা ভেট্রি কাজাঘম (টিভিকে) প্রধান বিজয়ের নির্বাচনী সভায় পদপিষ্ট কাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৪১ জনের। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ১৮ জন নারী ও ১০ জন শিশু। ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
এফআইআরে পুলিশ জানিয়েছে, বিজয়ের সভা সকাল ৯টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তিনি পৌঁছান সন্ধ্যা ৭টায়, যা অনর্থক প্রত্যাশা তৈরি করে। বিজয়ের বাস মাঝপথে একাধিক বিরতি নেয়, যা আসলে এক প্রকার রোডশো হয়ে ওঠে। এতে যান চলাচল ব্যাহত হয় এবং পানীয় জল ও প্রাথমিক সুযোগ-সুবিধার অভাবেও বিপুল সংখ্যক মানুষ বিপাকে পড়েন।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, টিভিকে কর্মীরা নির্ধারিত ব্যারিকেড ভেঙে শেডের টিনের ছাদে উঠে পড়েন বিজয়কে দেখার জন্য। ছাদ ভেঙে পড়ায় কয়েকজন ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং পরবর্তী সময়ে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে।
টিভিকে-র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, দুর্ঘটনা আসলে ডিএমকে-র ষড়যন্ত্রের ফল। দলীয় আইনজীবী মাদ্রাজ হাইকোর্টে সিবিআই তদন্ত বা বিশেষ তদন্তকারী দলের দাবি জানিয়েছেন। টিভিকে নেতা আধব অর্জুনও আদালতে আবেদন করে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ পুনরাবৃত্তি করেন।
তাঁদের আরও দাবি, বিজয়ের ভাষণের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, যা আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তবে বিদ্যুৎ দফতর জানিয়েছে, মূল সংযোগে কোনও সমস্যা হয়নি, ভিড়ের চাপে টিভিকে কর্তৃপক্ষের জেনারেটর ও আলো-ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।
অতিরিক্ত ডিজিপি ডেভিডসন দেবাসির্ভাথম জানান, অনুষ্ঠানটি ‘হাই-রিস্ক’ হিসেবে চিহ্নিত ছিল এবং ৫০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তবুও ভিড়ের চাপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। “আমরা আহতদের বের করতেও পারিনি, এমনকী বিজয়কেও সরানো যায়নি,” তিনি বলেন।
ঘটনায় ডিএমকে অভিযোগ এড়িয়ে গেছে। মুখপাত্র সৈয়দ হাফিজুল্লাহ জানান, “আমরা বিষয়টিকে রাজনৈতিক করতে চাই না। আইন তার নিজস্ব পথে চলবে।” মুখ্যমন্ত্রী এম.কে. স্টালিনও শান্তি ও সংযমের আহ্বান জানিয়ে ভুয়ো খবর প্রচার না করার অনুরোধ করেছেন।
মৃতদের পরিবারকে রাজ্য সরকার ১০ লক্ষ টাকা, টিভিকে ২০ লক্ষ টাকা এবং বিজেপি ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছে।