
বৃহস্পতিবার মহিলাদের একদিনের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান। আর এই ম্যাচেই ভারত-পাক উত্তেজনার আঁচ আরেকটু বাড়িয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়িকা সানা মীর। ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে পাক ব্যাটার নাতালিয়া পারভেজের প্রশংসা করছিলেন তিনি। এই সময় হঠাৎই বলে বসেন যে, ‘আজাদ কাশ্মীর’ থেকে উঠে এসেছেন নাতালিয়া।
সানার এই মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে ক্রিকেট মহলে। এ দিকে নিজের বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সানা নিজে কিন্তু একেবারেই অনুতপ্ত নন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও বিবৃতি দেয়নি। তবে তার আগেই সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন স্বয়ং সানা মীর। জানিয়ে দিলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনও মন্তব্য তিনি করেননি। বরং শুধু তুলে ধরতে চেয়েছিলেন পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে নাতালিয়ার লড়াই করে উঠে আসার কাহিনিটা।
ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে প্রথমে নাতালিয়া পারভেজ কাশ্মীর থেকে উঠে এসেছেন বলে উল্লেখ করেন সানা। কিন্তু এর পরই যেন নিজের ভুল শুধরে নিয়েই বলেন, “আজাদ কাশ্মীর”। এ বার সোশ্যাল মিডিয়ায় সে প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, “যেভাবে পরিস্থিতিকে গুরুত্ব না দিয়ে খেলাধুলার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ দেওয়া হচ্ছে সেটা দুর্ভাগ্যজনক। এটা দুঃখজনক যে, এর জন্য জনসাধারণের কাছে ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। একজন পাকিস্তানি খেলোয়াড়ের জন্মস্থান সম্পর্কে আমার মন্তব্যটি শুধুমাত্র পাকিস্তানের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে আসার সময় তিনি যে চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং তার অবিশ্বাস্য যাত্রা তুলে ধরার জন্যই ছিল।”

ম্যাচ চলাকালীন ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে সানা বলেছিলেন, “হ্যাঁ, এটা ঠিক যে তারা (পাকিস্তান মহিলা দল) বাছাই পর্বের ম্যাচ জিতেই যোগ্যতা অর্জন করেছে। কিন্তু এই ক্রিকেটারদের অনেকেই নতুন। আজাদ কাশ্মীর থেকে উঠে আসা নাতালিয়া লাহোরে প্রচুর ক্রিকেট খেলে। তাকে তার বেশিরভাগ ক্রিকেট খেলতে লাহোরেই আসতে হয়।” এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে ঝড় ওঠায় সানার অনুরোধ, বিষয়টির মধ্যে যেন রাজনীতিকে টানা না হয়। কারণ, কারও অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। ৩৯ বছর বয়সী সানা আরও লিখেছেন, “ধারাভাষ্যকার হিসেবে আমরা যে গল্প বলি, খেলোয়াড়রা কোথা থেকে আসে, এটা তারই অংশ। অন্য অঞ্চল থেকে উঠে আসা আরও দুই খেলোয়াড়কে নিয়েও এমন কথা বলেছি আমি। দয়া করে এর মধ্যে রাজনীতি টানবেন না।” এরই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “একজন ধারাভাষ্যকার হিসেবে বিশ্বের দরবারে আমাদের লক্ষ্য খেলাধুলা, দল এবং খেলোয়াড়দের উপর মনোযোগ দেওয়া, সাহস এবং অধ্যবসায়ের অনুপ্রেরণামূলক গল্প তুলে ধরা। আমার হৃদয়ে কোনও বিদ্বেষ নেই বা অনুভূতিতে আঘাত করার কোনও উদ্দেশ্য নেই।”