দোল পূর্ণিমা মানেই রঙের উৎসব, আর তার সঙ্গে যদি মেলে টানা তিন দিনের ছুটি, তবে তা ঘোরাঘুরির জন্য আদর্শ সময়। ১৪ মার্চ, শুক্রবার দোল। এরপর শনিবার ও রবিবার, ফলে একটানা তিন দিন ছুটি পাওয়া যাবে। চাইলে আরও দু’-এক দিন ছুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন একটু দূরের কোথাও। পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, শান্তিনিকেতন, মন্দারমণি বা মুর্শিদাবাদ তো রয়েছেই, তবে যদি একেবারে অন্যরকম দোল কাটাতে চান, তাহলে দেশের এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে রঙের উৎসব এক অন্য মাত্রা পায়।
বৃন্দাবনের দোল উৎসব ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত দোল উৎসবগুলোর মধ্যে একটি। এখানকার রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে প্রতিটি মন্দির, প্রতিটি কোণ রঙে মেতে ওঠে। বিশেষ আকর্ষণ লাঠমার হোলি, যা বরসানা ও নন্দগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী উৎসব। এখানে সারা সপ্তাহজুড়ে চলে দোলের আয়োজন, প্রতিটি দিনই এক নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে বৃন্দাবনকে। যারা রঙের সাগরে মেতে উঠতে চান, তাদের জন্য এটি এক আদর্শ গন্তব্য।
সিকিম দোলের ছুটিতে ঘোরার জন্য আরেকটি দারুণ জায়গা। বসন্তকালে সিকিমে গেলে পাহাড়ের কোলে রডোডেনড্রনের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। উত্তর ও পশ্চিম সিকিমের বেশিরভাগ জায়গায় এই সময় প্রকৃতি যেন এক রঙিন ক্যানভাস হয়ে ওঠে। কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্যও এই সময়ে দারুণ স্পষ্ট থাকে। আবহাওয়া থাকে মনোরম, না খুব ঠান্ডা, না খুব গরম। তাই যাদের শান্ত পরিবেশে বসন্ত উপভোগ করতে ইচ্ছে করছে, তাদের জন্য সিকিম আদর্শ গন্তব্য হতে পারে।
উত্তরাখণ্ডের আউলি শীতকালীন পর্যটনের জন্য বিখ্যাত হলেও বসন্তকালেও তার সৌন্দর্য কোনো অংশে কম নয়। মার্চ মাসে এখানে গেলে পাহাড়ি রাস্তায় রডোডেনড্রনের ঝোপ দেখতে পাওয়া যায়, যা পাহাড়ের সবুজের সঙ্গে অপূর্ব এক রঙের বৈচিত্র্য সৃষ্টি করে। আউলি থেকে চৌখাম্বা, নন্দাদেবী, ত্রিশূল, নন্দাকোটের মতো পর্বতশৃঙ্গ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। এখানকার এশিয়ার দীর্ঘতম এবং উচ্চতম রোপওয়ে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। যাঁরা পাহাড়ের মাঝে প্রকৃতির রঙিন বসন্ত উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য আউলি হতে পারে এক আদর্শ জায়গা।
দোলের ছুটি কাজে লাগিয়ে এমন কিছু জায়গায় ঘুরে এলে শরীর ও মন দুটোই সতেজ হয়ে উঠবে। তাই পরিকল্পনা সেরে এখনই বেরিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিন।