যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে আবারও উত্তেজনার আবহ। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর থেকেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত। আন্দোলন, স্লোগান আর রাজনৈতিক টানাপোড়েনে বিপর্যস্ত পড়াশোনা ও গবেষণা কার্যক্রম। এমন অবস্থায়, নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।
শুভেন্দুর মতে, যাদবপুরের শিক্ষা পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন কঠোর প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ। তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র পড়াশোনা ও গবেষণার কাজ চালু রাখতে হবে। বাকি সমস্ত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, ছাত্র সংসদ, কিছু নির্দিষ্ট সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে তথাকথিত কিছু ছাত্র সংগঠনের দফতর—সব কিছুর উপর কড়া নজরদারি প্রয়োজন। নকশাল মতাদর্শের ছাত্র সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাদবপুরের পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে বেশি সময় লাগবে না। যোগী আদিত্যনাথ বা হিমন্ত বিশ্বশর্মার মডেলে এক ঘণ্টার মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।’ তার মতে, পুলিশ প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলে যাদবপুরও দ্রুত বদলাতে বাধ্য হবে।
সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভে নামে ABVP। তাদের দাবি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে নকশাল মুক্ত করতে হবে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যখন ABVP সমর্থকরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করে এবং কিছু বামপন্থী ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে লাগানো বেশ কিছু পোস্টার ও পতাকা ছিঁড়ে ফেলে ABVP কর্মীরা। একপর্যায়ে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে থাকলে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করে এবং দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
এতদিন ধরে যাদবপুরে শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ ফেরানো নিয়ে বিতর্ক চলছিলই, এবার সেই বিতর্ক আরও গভীর হলো বিরোধী দলনেতার কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবির ফলে। এখন দেখার, রাজ্য প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই দাবি নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়।
Leave a comment
Leave a comment
