অনেক শিক্ষার্থীর কাছেই অঙ্ক একটি কঠিন ও ভীতিকর বিষয়। পরীক্ষা আসতেই উদ্বেগ বেড়ে যায়, মনে হয় অঙ্কের প্রশ্ন মানেই জটিল এক ধাঁধা। স্কুলে এই বিষয়টি নিয়ে আতঙ্ক কমবেশি অনেকের মধ্যেই কাজ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অঙ্ক নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভীতি থাকে, যার ফলে অনেকেই পাশ নম্বরের জন্য সংগ্রাম করেন। এবার এই সমস্যা সমাধানের জন্য রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর নতুন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করতে চলেছেন।
গণিতের ক্ষেত্রে ভুল সূত্র বা হিসাব করলেই উত্তর ভুল হয়ে যায়, যা শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। এই কারণে এবার রাজ্য সরকার ডিজিটাল শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে গণিতভীতি দূর করার পরিকল্পনা নিয়েছে। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্কুলগুলিতে বিশেষ ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অঙ্ক শেখানো হবে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, আগামী ১০ মার্চ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিধানসভায় শিক্ষা বাজেট পেশ করবেন, যেখানে এই নতুন শিক্ষামূলক প্রকল্পের বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে। বাজেট প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের গণিত শিক্ষার মান উন্নত করতে আধুনিক ডিজিটাল কনটেন্ট সরবরাহ করা হবে।’
এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের জন্য গণিত শেখার পদ্ধতিকে সহজ, আকর্ষণীয় ও কার্যকর করে তোলা, যাতে তারা গণিতকে ভয় না পায় বরং ভালোভাবে বুঝতে পারে। স্টেট কাউন্সিল অফ এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (SCERT) পুরো প্রকল্পের দেখভালের দায়িত্বে থাকবে। শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট https://sekha-scert.wb.gov.in ব্যবহার করে সহজেই এই ডিজিটাল কনটেন্টের সুবিধা নিতে পারবে। এখানে তারা নতুনভাবে গণিত শেখার কৌশল আয়ত্ত করতে পারবে এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খুঁজতে পারবে। এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘নিজে পড়া, নিজে শেখা।’
শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এর আগে শুধুমাত্র ইংরেজি বিষয়ে ডিজিটাল শিক্ষার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, এবার গণিতকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা যেমন সহজে অঙ্ক বুঝতে পারবে, তেমনি শিক্ষকরাও বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়ে নিজেদের পাঠদানের দক্ষতা বাড়াতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হলে শিক্ষার্থীরা গণিত শেখার এক নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করবে এবং পরীক্ষার ভীতি অনেকটাই দূর হবে। নতুন শিক্ষানীতির আওতায় পড়ুয়াদের মানসিক চাপ কমিয়ে তাদের শেখার প্রক্রিয়াকে আনন্দদায়ক করাই এই উদ্যোগের প্রধান উদ্দেশ্য।
Leave a comment
Leave a comment