কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের আট্টুকাল ভগবতী মন্দিরে বৃহস্পতিবার ধুমধাম করে উদযাপিত হলো ঐতিহ্যবাহী পোঙ্গল উৎসব। এই অনুষ্ঠানে অসংখ্য মহিলা ভক্তের অংশগ্রহণে শহরজুড়ে এক উজ্জ্বল ও আধ্যাত্মিক আবহ তৈরি হয়।
ভক্তদের সুবিধার্থে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় স্থানীয় মানাক্কাদ জুমা মসজিদ এবং সেন্ট স্টিফেন্স মেট্রোপলিটান ক্যাথিড্রাল। মসজিদ কর্তৃপক্ষ তাঁদের পার্কিং এলাকা উন্মুক্ত করে, যাতে ভক্তরা গাড়ি রাখতে পারেন। এছাড়া, আগত ভক্তদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে বিশেষ বিশ্রামস্থলের ব্যবস্থা করা হয়। তাঁদের সুবিধার জন্য পানীয় জল, মহিলাদের জন্য আলাদা শৌচাগার এবং গাড়িচালকদের বিশ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এমনকি, ভিড় নিয়ন্ত্রণে থাকা পুলিশ সদস্যদের জন্যও মসজিদের একটি কক্ষ খুলে দেওয়া হয়, যাতে তারা বিশ্রাম নিতে পারেন।
আট্টুকাল পোঙ্গল উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের সুবিধার্থে সেন্ট স্টিফেন্স মেট্রোপলিটান ক্যাথিড্রাল সহায়তা প্রদান করে। বিশ্রামের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা, বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং প্রয়োজনীয় শৌচাগারের ব্যবস্থা তারা নিশ্চিত করে।
এদিকে, ভেল্লয়ম্বলমের সেন্ট টেরেজা অব লিজিয়োর স্বেচ্ছাসেবীরা ভক্তদের মাঝে ঘোল বিতরণ করেন, যেন তারা ক্লান্তি দূর করতে পারেন।
দক্ষিণ ভারতের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব আট্টুকাল পোঙ্গলকে অনেকেই উত্তর ভারতের কুম্ভ মেলার সঙ্গে তুলনা করেন। এটি মূলত নারীদের উৎসব হিসেবে পরিচিত, যেখানে ১২ বছরের কম বয়সী ছেলেরাও অংশ নিতে পারে। শুধু কেরল নয়, ভারতের নানা রাজ্য এবং বিদেশ থেকেও বিপুল সংখ্যক ভক্ত এই উৎসবে যোগ দেন, যা এটিকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে।
দশ দিন ধরে চলা এই উৎসবের শেষ দিনে বিশেষভাবে দেবীকে নিবেদন করার রীতি অনুসারে মাটির বা ধাতব পাত্রে পোঙ্গল রান্নার প্রথা পালন করা হয়।
এবারও সেন্ট স্টিফেন্স মেট্রোপলিটান ক্যাথিড্রাল এবং মানাক্কাদ জুমা মসজিদ তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। মসজিদের এক প্রতিনিধি জানান, এটি তাদের বার্ষিক উদ্যোগের একটি অংশ।
তবে, রমজান মাসের কারণে এবছর দিনের বেলায় খাবার বিতরণ সম্ভব হয়নি। তাই আগের সন্ধ্যায় ইফতারের সময় মন্দিরে আসা ভক্তদের জন্য বিশেষভাবে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
এই ঘটনা প্রমাণ করে যে ধর্মীয় বিশ্বাস ভিন্ন হলেও সৌহার্দ্য, মানবতা ও সহমর্মিতাই প্রকৃত ধর্মের মূল শিক্ষা।
Leave a comment
Leave a comment