বাংলার ভোট মানেই এখন ধর্মের সমীকরণ! ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই রাজ্য রাজনীতিতে চওড়া হচ্ছে বিভাজনের রেখা। এবার সেই আগুনে আরও ঘি ঢাললেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে তাঁর চাঁচাছোলা মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
দিলীপ ঘোষের বক্তব্য স্পষ্ট— তৃণমূল সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করে, কিন্তু তাদের উন্নতি ঘটায় না। তিনি অভিযোগ করেন, বছরের পর বছর মুসলমানদের শুধু ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে দেখা হয়েছে, অথচ শিক্ষা, উন্নয়ন কিংবা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা কিছুই দেওয়া হয়নি। বরং রাজনৈতিক দলগুলিই তাঁদের পিছিয়ে রেখেছে। তাই এবার ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির মোহ কাটিয়ে নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে সংখ্যালঘুদেরও।
এই বক্তব্যের মধ্যেই বিজেপির হিন্দুত্ব রাজনীতি আরও জোরালো হয়ে উঠছে। শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যেই ‘সেভ হিন্দু’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ২০২৬-এর নির্বাচনে বাংলায় হিন্দু সরকারের প্রয়োজন, না হলে বিপদ আসন্ন! এই সুরে গলা মিলিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তীও। তিনি সরাসরি বলেছেন, বিজেপি না জিতলে হিন্দু বাঙালিদের জন্য কঠিন সময় আসবে।
বিজেপির নেতাদের এই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে বিভাজনের রাজনীতি করছে, বাংলার সম্প্রীতি নষ্ট করছে। তবে বিজেপির যুক্তি, তৃণমূলই প্রথম ধর্মীয় রাজনীতির খেলা শুরু করেছে, তাঁরা শুধু প্রতিরোধ করছেন।
ভোট যত এগোচ্ছে, ততই বাড়ছে ধর্মীয় মেরুকরণের পারদ। একদিকে সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে তরজা, অন্যদিকে হিন্দু ভোট ধরে রাখার লড়াই। এই রাজনৈতিক দাবা খেলায় শেষ পর্যন্ত কোন চাল চূড়ান্ত হবে, তা বলবে সময়।
