হুঁশিয়ার কারা? যাত্রীরা নাকি কান্ডারি!
নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত
পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় অনুপ্রবেশকারীদের খোঁজ। কোথাও আবার জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সন্ধান মিলছে। এই বিষয়টি সমগ্র দেশের মানুষের পক্ষে ভীষণ উদ্বেগের একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই রাজ্যের নাগরিক হিসেবে প্রতিটি মানুষ উৎকণ্ঠায় ভুগছেন। অনুপ্রবেশকারীরা চাইছে, এই রাজ্য তথা দেশকে নিজেদের আদি বাসস্থান হিসেবে চিহ্নিত করে নিজেদের কার্যক্রমকে প্রসারিত করতে। সারা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে এই সকল অনুপ্রবেশকারীদের পথনির্দেশিকার তালিকায় এক নম্বরে।
তবে এত কিছুর মধ্যে রাজ্যবাসীর মনে শুধু গাফিলতি নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।। কখনো প্রশাসনিক কখনো আবার রাজনৈতিক গাফিলতি রয়েছে বলে দাবি করছেন তারা। কিন্তু এত সংখ্যক সাধারণ মানুষের দাবি কি উড়িয়ে দেওয়া যায়? কারণ অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সন্দেহ বর্তমানে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। যাদের হাত দিয়ে এই আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কাজগুলি ঘটছে তারা হলো ক্ষমতার ছায়া আবৃত। তা না হলে পশ্চিমবঙ্গকে প্রবেশ পথ হিসেবে কিভাবে ব্যবহার করছে অনুপ্রবেশকারীরা?
এখনো পর্যন্ত রাজ্য থেকে যেসব অনুপ্রবেশকারীদের আটক করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের বাসিন্দা। যদিও তারা সেই দেশ থেকে বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের প্রাণে বাঁচাতে ভারতবর্ষে চলে এসেছে তেমনটা কিন্তু একেবারেই নয়। কারণ, তদন্তে যা উঠে এসেছে তা ভয়ানক। ভুয়া নথিপত্র বানিয়ে ভোটার কার্ডের নাম তুলে প্রায় দু বছরেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে তারা। এদের বেশিরভাগ জনেরই দায়িত্ব বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের হয়ে স্লিপার সেল গড়ে তোলা।
বর্তমানে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অশান্তির সবচেয়ে বড় প্রতিফলন হলো হিন্দু বিদ্বেষী মনোভাব। সেখানকার বাঙালিরা নির্যাতিত, নির্যাতিত হিন্দুরা। সেই নিয়ে এই দেশের রাজনীতিতে হিন্দুত্বের চাপানউতোর চলতেই থাকছে। তবে রাজ্যের মধ্যে জঙ্গি সংগঠনের এজেন্ট হিসেবে ঢুকে ভোটার কার্ড তৈরি করে কোথাও আবার মাদ্রাসা খুলে ব্যবসা চালিয়ে তলে তলে জঙ্গি সংগঠনকে আরো মজবুত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিছু জঙ্গি এজেন্ট। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের মোট ৪০৯৬ কিলোমিটার সীমান্তরেখার মধ্যে ২২১৭ কিলোমিটারই পশ্চিমবঙ্গের। বিবিধ বাস্তব কারণে সীমান্ত-পাহারায় বহু ফাঁকফোঁকর আছে। আর সেখান দিয়েই পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে অনুপ্রবেশকারীরা। এর জন্য দায় অবশ্য বিএসএফের। আরো ভয়ের বিষয় হলো, ভারত-বিদ্বেষী কিছু গোষ্ঠী ও দল পাকিস্তান মদতপুষ্ট হয়ে পশ্চিমবঙ্গে এসে ঘাঁটি স্থাপন করছে। বোঝাই যাচ্ছে এই চক্রান্তের জাল ঠিক কতদূর বিস্তৃত।