নয়া দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। অতিরিক্ত ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারালেন কমপক্ষে ১৮ জন। আহত আরও ১০ জন। শনিবার রাত ৯টা নাগাদ ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসতেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি। বিশৃঙ্খলার মধ্যে চলন্ত সিঁড়ির কাছে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান বহু যাত্রী। মুহূর্তেই মর্মান্তিক পদপিষ্ট কাণ্ড।
প্রথমে রেল কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর ঘটনা স্বীকার করেনি। কিন্তু এলএনজেপি হাসপাতালের রিপোর্টে স্পষ্ট হয়, পদপিষ্ট হয়েই মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৮ জনের। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। রেল সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার সময় আরপিএফ স্টেশনে ছিল না। ফলে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে পরিস্থিতি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ভিড়ের মধ্যে হঠাৎ ছড়িয়ে পড়ে গুজব— দুটি ট্রেন বাতিল হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার যাত্রী ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে ছুটে যান। এমনিতেই স্বতন্ত্র সেনানী এক্সপ্রেস ও ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস দেরিতে চলছিল। ফলে ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ছিল যাত্রীতে ঠাসা।
রেলওয়ে পুলিশের ডেপুটি কমিশনার কেপিএস মালহোত্রা জানিয়েছেন, প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৫০০ জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছিল কুম্ভগামী ট্রেনের জন্য। এটাই বিপদের মূল কারণ। প্ল্যাটফর্মের সীমাবদ্ধ জায়গায় এত ভিড়ের চাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, দুর্ঘটনার পর রেলের ঘোষণায় বিভ্রান্তি আরও বাড়ে। ১৫ ও ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসার ঘোষণা হতেই শুরু হয় ছোটাছুটি। আতঙ্কে যাত্রীরা ছুটতে থাকেন। একের পর এক মানুষ হুড়মুড়িয়ে পড়ে যান চলন্ত সিঁড়ির কাছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি হয়ে ওঠে বিভীষিকাময়।
ইতিমধ্যেই রেলের তরফে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না? কেন এত সংখ্যক টিকিট বিক্রি করা হল? কেন সঠিক সময়ে যাত্রীদের দিশা দেখানো গেল না? সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তদন্তে নেমেছে রেলওয়ে সুরক্ষা দফতর। তবে দেরিতে ব্যবস্থা নেওয়ায় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। তাঁদের প্রশ্ন, এত বড় দুর্ঘটনা কি এড়ানো যেত না?