সম্প্রতি রাজ্য সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যেখানে ভিন রাজ্যের নাগরিকদের রাজ্যের অভ্যন্তরে জমি ক্রয় করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো রাজ্যের ভূমি ও সম্পদ সুরক্ষা করা এবং স্থানীয় জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন যে, বহিরাগতদের জমি ক্রয়ের ফলে স্থানীয় জনগণের ভূমি অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। তাছাড়া, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যেই এমন আইন রয়েছে, যেখানে বাইরের মানুষদের জমি ক্রয় করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, এবং অরুণাচল প্রদেশে ‘ইনার লাইন পারমিট’ (আইএলপি) সিস্টেমের মাধ্যমে ভিন রাজ্যের নাগরিকদের জমি ক্রয় ও বসবাস নিয়ন্ত্রিত হয়। এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের ভূমি অধিকার ও সাংস্কৃতিক পরিচয় সুরক্ষিত থাকে।
রাজ্য সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভিন রাজ্যের ব্যক্তি বা সংস্থাগুলি রাজ্যের অভ্যন্তরে কৃষি, বাণিজ্যিক বা আবাসিক কোনো ধরনের জমি ক্রয় করতে পারবেন না। তবে, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) বা শিল্পাঞ্চলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট শর্তাবলী মেনে অনুমতি প্রদান করা হতে পারে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যের ভূমি বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে এবং স্থানীয় জনগণের জন্য জমি অধিগ্রহণ সহজতর হবে। তাছাড়া, ভূমি দখল ও জালিয়াতি সম্পর্কিত সমস্যাগুলি হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে বিভিন্ন মহল থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং স্থানীয় জনগণের স্বার্থ সুরক্ষিত করবে।
তবে, কিছু মহল থেকে এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হয়েছে, যেখানে তারা মনে করেন যে এটি রাজ্যের বাইরের বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করতে পারে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এ বিষয়ে রাজ্য সরকার জানিয়েছে যে, তারা বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ নীতিমালা প্রণয়ন করবে, যাতে রাজ্যের উন্নয়ন ও বিনিয়োগ উভয়ই সুরক্ষিত থাকে।