ক্রমেই লাগামছাড়া অবস্থায় চলে যাচ্ছে বাংলাদেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি।হিংসার শিকার হচ্ছেন সেদেশের নারীরা।পরিস্থিতি এমন জায়গায় যাচ্ছে যে তাতে ইউনূস প্রশাসনের উপর আর ভরসা রাখতে পারছে না বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।এই নিয়ে শনিবার নারী দিবসের দিনেই সরব হয়েছে বিএনপি সহ একাধিক রাজনৈতিক দল।এবার মধ্যরাতে মশাল হাতে পথে নামল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা।বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার সঠিক তদন্ত ও অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মধ্যরাতে রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ করেন।মাগুরায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তিরও দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা প্রথমে মিছিল নিয়ে বের হন, পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরাও বেরিয়ে আসেন।এই তথ্য দিয়েছে ডেইলি স্টার। শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন শনিবার রাত ১টা নাগাদ।যদিও এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় বেগম রোকেয়া হলের সামনেও মশাল মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
তবে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, প্রথম আলোর রিপোর্ট জানাচ্ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের দাবি জানান। বিক্ষোভে স্লোগান দেওয়া হয় ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও গত রাত পৌনে ২টো নাগাদ বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা ‘২৪ এর বাংলায়, ধর্ষকের ঠাঁই নাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। শনিবার মধ্যরাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীদের মিছিলে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, হ্যাং দ্য রেপিস্ট’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ যে সারাদেশে ধর্ষণ বেড়েই চলেছে।আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এই অবনতির দায় অন্তবর্তীকালীন সরকারকে নিতে হবে। অবিলম্বে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দাবি করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।
মধ্যরাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এমন উত্তাল হয়ে ওঠার দিনেই শনিবার বিএনপি অভিযোগ করে যে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি এমন পর্যায়ে যাচ্ছে যে তাতে প্রশাসনের উপর আর ভরসা রাখতে পারা যাচ্ছে না।নারী-নির্যাতনসহ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ চরম উদ্বিগ্ন বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এমন অবস্থাকে ‘সার্বিক নৈরাজ্যকর’পরিস্থিতি বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।শনিবার তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জমানার সঙ্গেও ইউনূস সরকারের তুলনা টানেন বিএনপি মহাসচিব। অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, দেশে নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন।কঠোর ব্যবস্থা নিতে না পারলে অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি করেন তিনি। মহিলাদের প্রতি হিংসা থামানোর দাবিতে শনিবার প্রতিবাদে পথে নামে ৬৭টি সংগঠন।
Leave a comment
Leave a comment