নয়া আয়কর বিল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। ২০২৪ সালের বাজেট পেশের সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানিয়েছিলেন, আয়কর আইনকে সহজ ও সংক্ষিপ্ত করা হবে। প্রায় ৬৪ বছর পুরনো আয়কর আইনে এবার আসতে চলেছে আমূল পরিবর্তন। করদাতারা কি সত্যিই উপকৃত হবেন, নাকি করের বোঝা আরও বাড়বে—এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে করদাতাদের মনে।
বর্তমান আয়কর আইন অত্যন্ত জটিল। করদাতাদের আইনি সমস্যার মুখে না পড়তে অনেক সময় চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের সাহায্য নিতে হয়। কিন্তু নতুন আয়কর আইনে ভাষা হবে সহজ, যাতে সাধারণ মানুষ নিজের কর নিজেই হিসাব করতে পারেন। সরকার চাইছে নতুন আইন পুরনো আইনের প্রায় অর্ধেকের সমান হোক, যাতে কর জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া হয় আরও স্বচ্ছ ও সহজ।
১৯৬১ সালের আয়কর আইনে প্রায় ২৯৮টি সেকশন ও ২৩টি চ্যাপ্টার রয়েছে। সময়ের সঙ্গে বহু ধারা সংশোধন হয়েছে, কিছু করও তুলে দেওয়া হয়েছে। নতুন কর আইনে অপ্রচলিত ও অপ্রয়োজনীয় ধারা একেবারে বাদ যাবে। ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র রিপোর্ট অনুযায়ী, এই আইন রাজস্ব নিরপেক্ষ হবে, অর্থাৎ করের হার পরিবর্তন হবে না। তবে ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর প্রতিবেদন বলছে, সরকার ইতিমধ্যে ৬,৫০০ জনের পরামর্শ সংগ্রহ করেছে, যা এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
২০০৯ সালে ইউপিএ সরকার ‘ডিরেক্ট ট্যাক্স কোড’ নিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল, যা মূলত আয়কর আইনের সরলীকরণের দিকেই ইঙ্গিত করেছিল। তবে সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হলেও নতুন আয়কর আইনে ডিরেক্ট ট্যাক্স কোডের কিছু উপাদান দেখা যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কর পরামর্শ সংস্থা ‘গ্রান্ট থর্নটন ভারত’-এর অংশীদার রিয়াজ থিংনা বলছেন, “নয়া আয়কর বিল সরকারের জন্য বড় পরীক্ষা। এটি করদাতাদের বোঝার সুবিধা করে দেবে কি না, তা এখন দেখার বিষয়।” যদিও অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, নতুন কর ব্যবস্থায় করদাতাদের স্বস্তি দেওয়া হবে, কিন্তু আসল চিত্র ফুটে উঠবে ২০২৬ সালের বাজেটেই।