শুধু আমেরিকার জনগণ নয়, কংগ্রেসের প্রথম যৌথ অধিবেশনে কী বলেন সেই দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা বিশ্ব। কারণ দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই ছিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে প্রথম ভাষণ। আর এই ভাষণ দিতে গিয়ে তাঁর পূর্ববর্তীদের সঙ্গে তুলনা টেনে বসেন। ট্রাম্প বলেন যে তাঁর সরকার “৪৩ দিনে যতটা অর্জন করেছে, অধিকাংশ প্রশাসন ৪ বছর বা ৮ বছরেও ততটা অর্জন করতে পারেনি”।
তিনি বলেন যে আমরা কাজ শুরু করেছি আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজের মধ্যে ফিরে এসেছে । ট্রাম্প বলেন, তার নতুন বাণিজ্য নীতি যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকের জন্য ভালো হবে। তিনি কৃষকদের ভালোবাসেন বলেও জানান। কংগ্রেসের ভাষণে কানাডা এবং মেক্সিকোর মাদক ফেন্টানিল নিয়েও কথা বলেন ট্রাম্প। বলেন, ‘কানাডা ও মেক্সিকো থেকে এত পরিমাণে ফেন্টানিল আমাদের দেশে আসতে আগে কখনও দেখা যায়নি।’ এটি হাজার হাজার পরিবার ধ্বংস করছে বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের দাবি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ‘মুক্ত বাকস্বাধীনতা’ ফিরিয়ে এনেছেন এবং তাঁর বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশের উদাহরণ দিয়েছেন।তাঁর দাবি ‘আমেরিকান স্বপ্ন অদম্য’ এবং আমাদের দেশ এমন একটি পুনরুত্থানের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে যা বিশ্ব আগে কখনও দেখেনি এবং সম্ভবত আর কখনও দেখবে না। তিনি আরও বলেন যে তিনি ‘পুরুষদের মহিলাদের খেলায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ’ করার আদেশ দিয়েছেন।এবং
এদিন ট্রাম্প শুধুমাত্র পুরুষ ও মহিলা এই দুই লিঙ্গ রয়েছে এমনটা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে নিয়ে বলেন যে তিনি ‘পুরুষদের মহিলাদের খেলায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ’ করার আদেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি বলেন, “আমরা আমাদের পাবলিক স্কুলগুলো থেকে ক্রিটিকাল রেস থিওরির বিষ দূর করেছি। আমি একটি আদেশ স্বাক্ষর করেছি যাতে এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সরকারি নীতি হয় যে শুধুমাত্র দুটি লিঙ্গ রয়েছে, পুরুষ ও মহিলা।”
ট্রাম্প জানান, “গত ৬ সপ্তাহে, আমি প্রায় ১০০টি নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর করেছি এবং ৪০০টিরও বেশি নির্বাহী পদক্ষেপ নিয়েছি – যা আমাদের দেশজুড়ে জ্ঞান, নিরাপত্তা, আশাবাদ এবং সম্পদ পুনরুদ্ধারের জন্য এটি একটি রেকর্ড। জনগণ আমাকে এই কাজ করার জন্য নির্বাচিত করেছে এবং আমি সেই কাজ করছি।”
মার্কিন কংগ্রেসের ভাষনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও জানান, “আমি দেশের সীমান্তে আক্রমণ এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মার্কিন সেনাবাহিনী এবং সীমান্ত রক্ষীদের মোতায়েন করেছি, এবং গত মাসে অবৈধ অনুপ্রবেশের সংখ্যা রেকর্ডে সর্বনিম্ন ছিল।” তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন,”আমি গ্রিন নিউজ স্ক্যাম, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, দুর্নীতিগ্রস্ত WHO, UNHRC থেকে আমেরিকাকে বের করে এনেছি – পূর্ববর্তী প্রশাসনের ইভি ম্যান্ডেট শেষ করেছি।”
এরই পাশাপাশি জো বাইডেনকে তিনি আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট বলে দাবি করেন। তাঁর দাবি বাইডেনের আমলেই প্রতি মাসে লক্ষাধিক অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটেছে আমেরিকায়।তিনি পূর্বসূরি জো বাইডেনের উপর ডিমের মূল্যবৃদ্ধির দায় চাপিয়ে তা “নিয়ন্ত্রণের বাইরে” থেকে কমিয়ে আনার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন বলে জানান। তাঁর বিতর্কিত শুল্ক বা ‘ট্যারিফ’ নিয়েও কথা বলেন তিনি।ভাষণে তাঁর দাবি,”ট্যারিফ হলো আমেরিকাকে আবার ধনী করা এবং আমেরিকাকে আবার মহান করার বিষয়।”
Leave a comment
Leave a comment