কিছু দেশের মানুষ ইচ্ছে থাকলেও ঢুকতে পারবেন না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে একটি তালিকা তৈরি করেছে ট্রাম্পের দেশ। সেই তালিকায় উঠে এল পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নাম। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চলেছে।দেশগুলির নিরাপত্তা ও বিপদ পর্যালোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা আগামী সপ্তাহ থেকেই কার্যকর হতে পারে।
হোয়াট হাউসে ২য় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেই প্রশাসনিক স্তরে একটি নির্দেশিকা জারি করেছিলেন ট্রাম্প। কোন কোন দেশের নাগরিকরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ তা ঝাড়াই বাছাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। ১২ মার্চ পর্যন্ত সেই তালিকা তৈরির ডেডলাইনও দেন প্রেসিডেন্ট। সেই অনুসারেই কোন কোন দেশের নাগরিকদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে আংশিক ও পূর্ণ বৈধতা দেওয়া হবে সে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এই তালিকায় নাম নেই পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সহ কয়েকটি দেশের। যাদের ‘ভেটিং ও স্ক্রিনিং তথ্য অত্যন্ত অপর্যাপ্ত’ তাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
অথচ মঙ্গলবারই ডোনাল্ড ট্রাম্প সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে সহযোগিতার জন্য পাকিস্তানের প্রশংসা করেছিলেন।মঙ্গলবার কংগ্রেসে তার প্রথম ভাষণে ট্রাম্প তালিবান সন্ত্রাসী মোহাম্মদ শরিফুল্লাহর গ্রেফতারে ইসলামাবাদের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাবুল বিমানবন্দরে ২০২১ সালে আমেরিকান সৈন্যদের উপর হামলার জন্য মোহাম্মদ শরিফুল্লাহকেই দায়ী করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি বিশেষভাবে পাকিস্তান সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এই দানবকে গ্রেফতার করতে সহায়তার জন্য। এই দিনটি সেই ১৩টি পরিবারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যাদের বেশিরভাগকে আমি ব্যক্তিগতভাবে ভালোভাবে চিনি, যাদের সন্তানদের হত্যা করা হয়েছিল এবং সেই ভয়াবহ দিনে আফগানিস্তানে যারা মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন।”
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ট্রাম্পের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাকে ধন্যবাদ জানান এবং এটিকে ইসলামাবাদ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার সংকেত বলে অভিহিত করেন। বুধবার শরিফ বলেন, “আমরা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে অংশীদারিত্ব চালিয়ে যাব।”
কিন্তু এর একদিন পরেই মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে প্রশাসন একটি নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করতে চলেছে, যা পাকিস্তানি নাগরিকদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বন্ধ করতে পারে। বলা হয় এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেশগুলির গোয়েন্দা-তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা এবং নাগরিকদের সম্পর্কে পর্যালোচনার ভিত্তিতে শুরু করা হয়েছে এবং এটি আগামী সপ্তাহ থেকেই কার্যকর হতে পারে।পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ছাড়াও অন্যান্য দেশও এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তালিকায় থাকতে পারে।
তবে এটাই প্রথম নয়। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ২০১৭ সালে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে ৭টি বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় প্রবেশের উপর বিধিনিষিধ আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প।সেই সাতটি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হল ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া এবং ইয়েমেন।এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হলেও ২০১৮ সালে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। তবে তবে ২০২১ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব নিয়ে জো বাইডেন ওই নিষেধাজ্ঞাটি বাতিল করেন।
Leave a comment
Leave a comment