ঋতাভরী চক্রবর্তী, টলিউড জগতে বর্তমানে একের পর এক প্রজেক্টে কাজ করছেন তিনি। বিভিন্ন ওয়েব সিরিজ যেমন ‘ফাটাফাটি’, ‘বহুরপী’-তে নজর কেড়েছেন তিনি। এছাড়াও নানান কাজ করছেন বিটাউনে। কিন্তু ছোট থেকে এক অদ্ভুত মানসিক রোগের শিকার নায়িকা! আর এই সমস্যার কারণে নাকি একবার গাড়ি থেকে ঝাঁপ দিতে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী সে কথা এবার নিজের মুখেই জানলেন ঋতাভরী।
স্ট্রেট আপ উইথ শ্রী পডকাস্টে নিজের সমস্যা নিয়ে মুখ খুলেছেন ঋতাভরী। তিনি জানান, খুব কম বয়সে এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ তাঁকে অপেক্ষা করে জানান,তিনি নাকি ‘রেকারিং ডিপ্রেশন’ নামে একটি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এটি সাধারণত জিনগত রোগ।
এই নিয়ে ঋতাভরী বলেন, “আমার চিকিৎসক মনরোগ বিশেষজ্ঞ ড. দেব আমাকে দেখে, আমার সঙ্গে কথা বলে বুঝে আমার মা কে বললেন ওঁর একটা অসুখ আছে, সেটার নাম ‘রেকারিং ডিপ্রেশন’, এটা জিনগত। এখানে ওঁর কিছু করার নেই। ও পরিবারের কারুর থেকেই জিনগত ভাবে পেয়েছে, এবং কোনও ভাবে এখন বিষয়টা সক্রিয় হয়ে গিয়েছে। ওঁর এই সমস্যা সারাজীবন থাকবে। এই অসুখ কোনও দিনও যায় না।”
ঋতাভরী আরও জানান, “আমাকে তিনি খুব সাদামাটা বাংলায় বুঝিয়ে ছিলেন এই অসুখটা ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলে। কখন এর প্রভাব বৃদ্ধি পায়, বা কখন এর প্রভাব গভীর হয়। পাশাপাশি কীভাবে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় সেটাও তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন যে আমাকে যোগব্যায়াম করতেই হবে। শরীরচর্চা না করলেই সমস্যা। এক্ষেত্রে আমি কোনও ভাবেই আপস করতে পারব না।”
যদিও এই সমস্যার সমাধানের জন্য ওষুধের উপর নির্ভর করতে চাননি অভিনেত্রী। নায়িকা বলেন,”চিকিৎসক জানান, আমাকে যদি ওষুধ এড়িয়ে চলতে হয় তবে স্বাভাবিক ভাবেই মনকে খুশি রাখতে হবে। তাই খুব অল্প বয়স থেকেই আমাকে ধ্যান, মন একত্রিত করা বা এই ধনের বিষয়গুলো শেখানো হয়, যাতে আমি সুস্থ থাকতে পারি। তবে এর জন্য অবশ্য শুরু দিকে কিছুটা ওষুধের সাহায্য নিতে হয়েছিল। কিন্তু পরে তা ঠিক হয়ে যায়, আর ওষুধ খেতে হয় না।” ঋতাভরীর কথায়, “তারপর ওগো বধূ সুন্দরী’ হল। আমি বড় হলাম, অনেক কাজ করতে শুরু করলাম।”
তবে এই রোগের শিকার হয়ে তাঁর ঠিক কি অবস্থা হয়েছিল সেই প্রসঙ্গে ঋতাভরী বলেন, “তখন আমি ক্লাস ১২-এ পড়ি। একদিন হলুদ ট্যাক্সি করে বাড়ি ফিরছিলাম। আমার এখনও মনে আছে, বাইপাসের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। যেখানে ডান দিকে ভেরীটা আছে, ওখানে গিয়ে আমার কেমন যেন মনে হচ্ছিল আমি গাড়ির হাতলটা টানি, টেনে ঝাঁপ দিয়ে দিই।”