সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
ফের কেন্দ্রীয় ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের সমালোচনায় সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আয়ুষ্মান ভারত নয়, বাংলার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পই ‘সর্বজনীন’। রাজ্য বিধানসভায় স্বাস্থ্য দপ্তরের বাজেট বক্তৃতায় এভাবেই কেন্দ্রীয় আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার বক্তব্য ” আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প সবার জন্য নয়, এটা একটা নির্দিষ্ট শ্রেনীর মানুষের জন্য। আর আমাদের স্বাস্থ্যসাথী সবার জন্য। ৯ কোটি মানুষ স্বাস্থ্য সাথীর সেবা পেয়েছেন। তাছাড়া বেসরকারি হাসপাতালে প্রায় ১ কোটি মানুষ স্বাস্থ্য সাথীর সেবা পেয়েছে।” রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে তো বটেই অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। “স্বাস্থ্যে আজ বাংলাই দেশের সেরা” চ্যালেঞ্জ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
রাজ্যের আর্থিক ক্ষমতা কম, স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে কেন্দ্র যথাযথভাবে টাকা দেয় না এই অভিযোগ তুলে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং চিকিৎসক নার্সদের উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ভূমিকা কথাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন,
” স্বাস্থ্যের কতগুলো প্যারামিটার থাকা দরকার।
আমি যখন বিরোধী দলে ছিলাম তখন আমি দেখতাম হাসপাতালে ঢোকার গেটগুলো ছোটো ছোটো। হাসপাতালের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ইঁদুর বিড়াল ঘুরে বেড়াতো। আজকেও হয়তো কিছু কিছু জায়গায় সেটা হয়, তবে এখন আর সব জায়গায় হয় না।”
মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দাবি, ১৪ হাজার নতুন চিকিৎসক নিয়োগ হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিষেবা খাতে ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। রাজ্যে ৪৩ টি মাল্টি সুপার হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। স্টেট অফ আর্ট ক্যান্সার সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে। একটা এসএসকেএম হাসপাতালে আরেকটা শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। মুখ্যমন্ত্রীর আক্ষেপ, যাদের পয়সা আছে তারা বাংলা থেকে তামিলনাড়ুতে চিকিৎসা করাতে যান। অথচ বাংলায় বিনা পয়সায় চিকিৎসা করানো হয়। এমনকি বাইরের লোকেরাও এখানে এসে চিকিৎসা করান।
মমতার দাবি,” টাকা তো আকাশ থেকে পড়ে না। কেন্দ্র তো এক টাকাও দেয় না। তবুও সব স্তরের চিকিৎসকদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। ৯৯ শতাংশ টিকাকরণের কাজ করা হয়েছে।”
বিরোধীপক্ষকে কটাক্ষের সুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন, যারা ‘হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই’ বলে বেড়াচ্ছে
যখন বিহার থেকে ত্রিপুরা থেকে বা নর্থ ইস্ট থেকে মানুষ এসে বাংলায় চিকিৎসা করায় তখন তারা কি একবারও খোঁজ নিয়েছেন? মুখ্যমন্ত্রীর কথায় “বাংলা সবাইকে আপন করে নেয়। তবে কেন অন্য জায়গায় বাঙালি খেদাও করা হয়? মানুষ তৈরি হচ্ছে যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য।”