কলমে অভিজিৎ বসু
আজ হলো শুধুই সুখের দিন। ২০ মার্চ আন্তর্জাতিক সুখ দিবস বা বিশ্ব সুখী দিবস। ২৮ জুন ২০১২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক অধিবেশনে এ দিনটি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর বিশ্বের একাধিক দেশ এই দিবসটি নানা আয়োজনে পালন করে। আন্তর্জাতিক সুখ দিবস দিনটি পালন সংক্রান্ত বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রস্তাবে বলা হয় মানুষের জীবনের মূল উদ্দেশ্য সুখে থাকা। ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণসহ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য দিবসটি পালন করা হবে। এই দিবসটির প্রতিষ্ঠাতা অর্থনীতিবিদ জেম এলিয়েন। তিনি জাতিসংঘের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও জাতিসংঘের পরামর্শদাতা এবং শান্তি ও নিরাপত্তা অর্থনীতিবিদদের প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘ অনুমোদিত এনজিও ইসিওএসসি বিশেষ পরামর্শ দাতার দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘ তাদের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ওপর পূর্ণ এক বছর জরিপ পরিচালনা করে এ দিবসের সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করে। সেই সুখের নিরিখে এই বছর ও ফিনল্যান্ড সারা বিশ্বে সুখের দেশ এর তকমা পেয়েছে। সুখ এর সংজ্ঞা কী? কারা সুখী আর কারা সুখী নয় অসুখী সেটা মাপার তো আর কোনোও সূচক নেই। অসুখ মাপার নির্ধারণ করার সূচক কি। যাতে মেসিনে ধরা পড়বে অসুখ মাপা যাবে এই পদ্ধতিতে। সেটা নিয়ে আমার মাঝে মাঝেই চিন্তা হয়। এইবার সুখের তালিকায় ১২৪ তম স্থানে আছে ভারতবর্ষ। মেরা ভারত মহান। দ্রুত গতিতে বাড়ছে দেশের জিডিপি। বাড়ছে দেশের উন্নয়ন এর হার। মজবুত হচ্ছে দেশের গণতন্ত্র। চওড়া হচ্ছে শাসক দলের নেতাদের মুখের হাসি কিন্তু সুখের নিরিখে আমাদের দেশ খুব বেশি এগোতে পারে নি এই বছরেও। যে দেশে চাষের অত্যাবশ্যকীয় জলের জন্য চাষীকে আত্মহত্যা করতে হয়। যে দেশে অভয়ার বিচার পেতে মাথা কুটে মরতে হয়। যে দেশে চাষীদের ন্যায্য আন্দোলনকে পুলিশ লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে দেয়। যে দেশে রাম আর রহিম এর মধ্যে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি হয়। সেই রাজনীতির জেরে হিংসা হানাহানি হয়। ভোটের রাজনীতিতে ধর্ম প্রবেশ করে সুড়সুড় করে চুপি চুপি ফিস ফিস করে কথা বলে তারা। আমাদের দেশে মন্দির মসজিদ তৈরি হয়। আমাদের দেশের মহাকুম্ভের স্নান হয়। কিন্তু সেই পোড়া দেশে সুখ আসে না কিছুতেই। সুখের আবেশে ভেসে যায়না সেই দেশের মানুষ। যাঁরা দু হাত তুলে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে একে অপরকে জড়িয়ে আঁকড়ে ধরে বলতে পারে আমরা খুব সুখী। আমরা সবাই সুখী। সব কিছু থাকলেও আমাদের দেশে যে সেটাই নেই। সুখের জন্য হা পিত্যেস করে বসে থাকতে হয় আমাদের।