স্নিগ্ধা চৌধুরী
চার দিন ধরে সীমান্তে রক্তের হোলি। গোলাগুলি, বিমান হানা আর বিস্ফোরণে উত্তাল হয়েছিল নিয়ন্ত্রণ রেখা। কিন্তু হঠাৎ করেই শনিবার বিকেলে যুদ্ধ থামিয়ে দিল দুই দেশ। প্রশ্ন উঠছে , কেন এই যুদ্ধবিরতি? ভারতই বা রাজি হল কেন?
উত্তর লুকিয়ে আছে কূটনীতির ময়দানে। নয়াদিল্লির সূত্র বলছে, যুদ্ধবিরতিতে সম্মতির আগে পাকিস্তানই হাত পেতেছে। বিকেল ৩:৩০-এ ইসলামাবাদের ডিজিএমও ফোন করে দিল্লিকে অনুরোধ করে — “থামান যুদ্ধ”। সন্ধ্যা ৫টা থেকে কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি।
কিন্তু ভারত কেন রাজি হল? বিশ্লেষকরা বলছেন, এই যুদ্ধবিরতি ভারতের শর্তে, ভারতের নিয়মে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে পররাষ্ট্র দফতর ও জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শদাতা দোভালের কৌশলগত চাপেই এই বাঁকবদল।
পাকিস্তানের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। আইএমএফ-এর ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পেতে গেলে ইসলামাবাদকে যুদ্ধ থামাতেই হত। আমেরিকার স্পষ্ট হুঁশিয়ারি ছিল , শান্তি না আনলে টাকা নয়। আর সেই চাপে কাঁপতে কাঁপতে ফোন পাকিস্তানের।
ভারতের লাভ কী? একদিকে সীমান্তে সেনার সুনির্দিষ্ট অভিযানে পাকিস্তানের আটটি সামরিক ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মহলে সন্ত্রাসবিরোধী ভারতের অবস্থান আরও জোরালো হয়েছে। ভারত জানিয়েছে , যে কোনও জঙ্গি হামলা ভবিষ্যতে যুদ্ধ বলেই ধরা হবে।
সবচেয়ে বড় কথা, যুদ্ধ থেমেছে, কিন্তু ভারত শান্তিতে বিশ্বাস করে এমন বার্তা বিশ্বের দরবারে পৌঁছে গেছে। একইসঙ্গে সেনা প্রস্তুতি বজায় রেখে দিল্লি জানিয়ে দিয়েছে , যদি বিশ্বাসভঙ্গ হয়, জবাব হবে ভয়ঙ্কর।
সুতরাং, যুদ্ধবিরতি কোনও কমজোরির নমুনা নয়। এটা ভারত সরকারের এক শক্তিশালী কূটনৈতিক চাল, যেখানে পাকিস্তান মুখ রক্ষা করেও হার মানতে বাধ্য হয়েছে।
