ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার আবহে হঠাৎই শান্তির সুর বাজালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার ওয়াশিংটনে এক সাংবাদিক বৈঠকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তিনি দাবি করেন, তাঁর প্রশাসনের সক্রিয় মধ্যস্থতায় এক ভয়াবহ পরমাণু যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘শনিবার আমাদের প্রশাসনের সহায়তায় সংঘর্ষ বিরতি টানা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এই মধ্যস্থতা দু’টি পরমাণু শক্তিধর দেশকে যুদ্ধের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। আমরা একটি পরমাণু যুদ্ধ আটকাতে পেরেছি—এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য। যদি যুদ্ধ বাধত, লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারাতে পারতেন। সেই বিপদ আটকাতে পেরে আমি গর্বিত।’
নিজের কৃতিত্ব দাবি করার পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধানদের দায়িত্ববোধের প্রশংসাও করতে ভোলেননি ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘ভারত ও পাকিস্তানের নেতারা পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করেছেন এবং সংঘর্ষ এড়ানোর পথ খুঁজেছেন।’
তবে প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ কি নয়াদিল্লি এই ‘মধ্যস্থতা’কে গুরুত্ব দিচ্ছে? সূত্র অনুযায়ী, শনিবার আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই কথোপকথনে মোদী স্পষ্ট বার্তা দেন, ‘পাকিস্তান যদি জঙ্গিদের আমাদের হাতে তুলে দেয় এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) ফিরিয়ে দেয়, তবেই আমরা আলোচনায় বসার কথা ভাবব। এই বিষয়ে কোনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা দরকার বলে আমরা মনে করি না।’
প্রসঙ্গত, শনিবার ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার পর উত্তেজনা চরমে পৌঁছয়। সেই সময়েই ট্রাম্প এক্স (প্রাক্তন টুইটার)-এ ঘোষণা করেন, তাঁর প্রচেষ্টায় দু’দেশ সংঘর্ষ বিরতির দিকে এগোচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক মহলে ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে কেউ কেউ কূটনৈতিক প্রচার বলেই ব্যাখ্যা করছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন স্পর্শকাতর ইস্যুতে হঠাৎ করে নিজের কৃতিত্ব ঘোষণা কূটনৈতিক শিষ্টাচারের বাইরে পড়ে যায়। ভারতও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক সমস্যা নিয়ে তারা বাইরের কোনও দেশের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করবে না। তবে আপাতত উপমহাদেশে কিছুটা হলেও উত্তেজনা প্রশমিত হয়েছে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় স্বস্তির বিষয়।
