ভারত-পাক উত্তেজনার আবহে জানা গেল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ৩৬টি অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ ওত পেতে অপেক্ষা করছে পাকিস্তানের প্রধান বন্দর-শহর করাচির খুব কাছে। নেতৃত্বে ‘আইএনএস বিক্রান্ত’। প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে করাচি বন্দর ধ্বংস করে দিয়েছিল ভারতীয় নৌসেনার মাত্র ৬টি যুদ্ধজাহাজ। সেই তুলনায় এ বার তার ৬ গুণ শক্তি নিয়ে হাজির নৌসেনা।
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে ভারত। সূত্রের খবর, এর অংশ হিসেবে ভারতীয় নৌবাহিনী করাচির খুব কাছাকাছি ৩৬টি অতি শক্তিশালী নৌবহর মোতায়েন করেছিল। যাদের নেতৃত্বে ছিল এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ‘আইএনএস বিক্রান্ত’। এ ছাড়াও ছিল বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক সাবমেরিন এবং অন্যান্য যুদ্ধজাহাজ। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় যেখানে মাত্র ৬টি যুদ্ধজাহাজেই ‘কাজ শেষ’ হয়েছিল, সেখানে এ বার করাচিকে নিশানা করেছিল তার ৬ গুণ বেশি যুদ্ধজাহাজ। সমুদ্রপথে চরম হামলার আশঙ্কায় পাকিস্তান সতর্কতা জারি করে, কারণ করাচির কাছে ভারতীয় নৌবাহিনীর বিপুল উপস্থিতি তাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অঙ্গ হিসেবে ‘আইএনএস বিক্রান্তের’ নেতৃত্বে ৮-১০টি যুদ্ধজাহাজ ঝড়ের বেগে আরব সাগরে এগিয়ে যায় করাচির দিকে। সঙ্গে ছিল সাতটি ‘ডেস্ট্রয়ার’, যে গুলিতে ব্রহ্মোস মিসাইল, ‘মিডিয়াম-রেঞ্জ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল’ এবং ‘মারণাস্ত্র হেভি টর্পেডো’ বসানো ছিল। একই সঙ্গে সাতটি ‘স্টিলথ গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেট’ও মোতায়েন করা হয়, যার মধ্যে ছিল সদ্য যুক্ত হওয়া ‘আইএনএস তুশিল’। সমুদ্রের তলায় ছ’টি সাবমেরিন গোপনে পৌঁছে গিয়েছিল করাচির আরও কাছে। ‘ফাস্ট অ্যাটাক ক্রাফট’ এবং মিসাইল বোটও এই অভিযানে অংশ নেয়। মোট ৩৬টি নৌসামরিক অস্ত্র মোতায়েন করে ভারত, যা পাকিস্তান নৌবাহিনীর বর্তমান ৩০টিরও কম যুদ্ধজাহাজের তুলনায় অনেক বেশি। পাকিস্তান নৌবাহিনী কার্যত করাচি বন্দরের ভেতরেই আটকে পড়ে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজগুলিও করাচির আশপাশের উত্তেজনাপূর্ণ জলপথ এড়িয়ে চলতে শুরু করে। ফলে, বিমানের মতো সাধারণ জাহাজকে ঢাল হিসেবে ব্যবহারের পাক অপচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়ে। দুঃস্বপ্ন দেখতে শুরু করে পাকিস্তানের নৌবাহিনী। যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হওয়ায় হাফ ছেড়ে বাঁচে তারা।
ভারত গত ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে। আকাশ হামলায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জঙ্গি ঘাঁটি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ গত ৮ মে সর্বদলীয় বৈঠকে জানান, অভিযানে কমপক্ষে ১০০ জঙ্গি এবং তাদের সহযোগী নিহত হয়েছে। অবশেষে, ১০ মে ভারত ও পাকিস্তান সামরিক স্তরে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে পৌঁছয়। কিন্তু আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারত এখনও প্রস্তুতি জারি রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সামান্য বেচাল দেখলেই আবার শুরু হয়ে যাবে আপাতত স্থগিত থাকা ‘অপারেশন সিঁদুর’।