স্থলবাহিনীর প্রধান কর্নেল জেনারেল ওলেগ সালিউকভকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে জল্পনা। ইউক্রেনের সঙ্গে ৩ বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত এগিয়ে থাকার দাপটেই রয়েছে রাশিয়া। ২০১৪ সাল থেকে এই দায়িত্বে থাকা সালিউকভ ২০২৩ সাল থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসনের ডেপুটি কমান্ডার হিসেবেও কাজ করছিলেন।
হঠাৎ কী এমন ঘটল যাতে সালিউকভকে সরে যেতে হল? মজার বিষয় হল, গত সপ্তাহেই সালিউকভ রেড স্কয়ারে অনুষ্ঠিত গ্র্যান্ড ভিক্টরি ডে প্যারেডে ট্যাংক কমান্ডের নেতৃত্ব দিয়েছেন। নাজি জার্মানির বিরুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। যদিও ক্রেমলিন দাবি করেছে, ইউক্রেনে যুদ্ধের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তুষ্টি থেকে সালিউকভকে সরানো হয়নি। বলা হয়েছে ৭০ বছর বয়সী এই জেনারেল এখন তার প্রাক্তন বস এবং প্রান্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর অধীনে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এই পরিষদকে রাশিয়ার প্রভাবশালী নেতাদের জন্য একটি ‘রাজনৈতিক অবসরকেন্দ্র’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেমন, প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ এই পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান। অন্যদিকে চেয়ারম্যান স্বয়ং ভ্লাদিমির পুতিন।
তবে দুর্নীতি এবং ইউক্রেন যুদ্ধে বাস্তবে ধীর অগ্রগতির কারণে সালিউকভকে প্রতিস্থাপন করা হতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষণ বলছে যুদ্ধাস্ত্র এবং সেনার সংখ্যায় এগিয়ে থাকলেও গত কয়েক মাসে সেভাবে সাফল্য পায়নি রুশ ফৌজ। তা ছাড়া, সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আর্থিক দুর্নীতিরও অভিযোগ উঠেছিল। সেই কারণেই সরতে হল জেনারেল সালিউকভকে।
স্থলবাহিনী প্রধানের দায়িত্বে থাকার আগে সালিউকভ চার বছর রাশিয়ান জেনারেল স্টাফের ডেপুটি প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত তিনি কিয়েভ মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টে রেড আর্মির বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। ৮০ ও ৯০-এর দশকের শুরুতে তিনি মস্কো অঞ্চলে একটি ট্যাংক ট্রেনিং রেজিমেন্টের কমান্ডার হিসেবে কাজ করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্র এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাড়িয়ে পুতিনের।একদিকে চাহিদা মত সাফল্য না আসা এবং যুদ্ধ থামাতে আন্তর্জাতিক চাপ সামলানো রীতিমত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ইস্তাম্বুলে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনার আবহেই এমন পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
Leave a comment
Leave a comment
