পাকিস্তানি জঙ্গিদের উপস্থিতির সন্দেহে ভারত আর নেপাল একসঙ্গে মিলে ভারত-নেপাল সীমান্তে বড়সড় তল্লাশি অভিযান চালাল। শুক্রবার সকালে ভারতীয় সশস্ত্র সীমা বল ও নেপালের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী যৌথভাবে সীমান্ত লাগোয়া জঙ্গলঘেরা নো ম্যানস ল্যান্ড এলাকায় এই অভিযান চালায়। গোয়েন্দা সূত্রে খবর ছিল, কিছু পাকিস্তানি জঙ্গি সীমান্ত পার করে নেপালের ভেতরে ঢুকেছে এবং তারা নেপালগজ্ঞ এলাকায় এক ইসলামিক সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। এই সংগঠনে আগে পাকিস্তানি নাগরিকরা বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসত বলেও জানা গেছে। সেইসব তথ্যের ভিত্তিতেই ভারত-নেপাল যৌথভাবে অভিযান শুরু করে।
ভারতের SSB বাহিনীর কমান্ড্যান্ট গঙ্গা সিং জানিয়েছেন, নেপাল বাহিনীর সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক আছে। প্রতি মাসেই সীমান্ত বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় মিটিং হয়। ওরা যেমন আমাদের তথ্য দেয়, আমরাও ওদের সঙ্গে সব রকম গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করি। এই অভিযান চলাকালীন ভারতীয় বাহিনী ওয়াচ টাওয়ার থেকে সীমান্তে নজরদারি চালাচ্ছে এবং হাতের কাছে ইনসাস রাইফেলসহ পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে যেকোনও বিপদের জন্য।
নেপাল সরকারের তরফ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, “নেপাল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবসময় পাশে আছে। কোনও শত্রু শক্তিকে আমাদের মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।” সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান, যাঁদের মধ্যে একজন নেপালি নাগরিকও ছিলেন। এই ঘটনার পরেই নেপালে রাজনৈতিক মহল ও সংসদে সরব হয় সরকারের অবস্থান নিয়ে। এরপরেই দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে সমন্বয় বেড়েছে।
এই ঘটনার পটভূমিতে ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ অভিযান চালায় পাকিস্তানের মাটিতে থাকা সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটির বিরুদ্ধে। তাতে উত্তেজনা বেড়েছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কেও। ফলে ভারত-নেপাল সীমান্তে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। দুই দেশের সীমান্ত বাহিনী এখন আরও ঘন ঘন টহল দিচ্ছে, একে অপরকে তথ্য দিচ্ছে এবং যে কোনও সন্ত্রাসী তৎপরতা ঠেকাতে যৌথ উদ্যোগ নিচ্ছে।
সবমিলিয়ে ভারত-নেপাল সীমান্তে এখন কড়া নজরদারি চলছে। সীমান্ত পেরিয়ে যাতে কেউ জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতেই এই যৌথ অভিযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
