বুধবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পেলেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মঙ্গলবার আজহারুল খালাস পান।
প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আজহারুলের আপিল মঞ্জুর করে তাঁকে খালাস দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আজহারুলের করা আপিল সর্বসম্মতিতে মঞ্জুর করে এ রায় দেওয়া হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট আজহারুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজহারুলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দিয়েছিলেন।এর বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে আপিল করেন আজহারুল।এই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৩১শে অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আজহারুলের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ফের তার পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করেন আজহারুল।জুলাই অভ্যুত্থানে সরকার বদলের পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আপিল বিভাগ চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি রিভিউ শুনে ফের আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত দেন।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির এই রায় প্রত্যাখ্যান করেছে বামপন্থী সাতটি ছাত্রসংগঠনের মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।তাদের দাবি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং স্বাধীন বিচারব্যবস্থার যে প্রত্যাশা তৈরি করেছিল, এই রায় সেই প্রত্যাশাকে ভেঙে দিয়েছে। মঙ্গলবারই গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
আজহারুল ইসলাম ও তাঁর দল জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল ও গণহত্যায় অংশগ্রহণ করেছিল বলে উল্লেখ করেছে জোট।তাঁদের দাবি এর মাধ্যমে আদালতের নিরপেক্ষতা প্রশ্নের মুখে পড়ল।তাঁদের অভিযোগ বিচারব্যবস্থা যে এখনও পুরো মাত্রায় রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত,তা প্রমাণিত হল।
আজহারুল ইসলামের মুক্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও কর্মীদের কোনও আচরণে বা কাজে কষ্ট পেয়ে থাকলে সেজন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন সেদলের আমির ডা. শফিকুর রহমান।তিনি আরও বলেছেন, “মানুষ আমরা, কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে না। দল হিসেবে আমরা দাবি করি না যে আমরা ভুলের ঊর্ধ্বে।”
Leave a comment
Leave a comment