সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়– যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো নিয়ে ফের কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েন। আর এই টানাপড়েনের কেন্দ্রে রাজ্যের কৃষি দফতর। অভিযোগ, রাজ্য সরকার ও কৃষি দফতরের মন্ত্রী-সচিবদের সম্পূর্ণ এড়িয়ে রাজ্যের জেলাস্তরের কৃষি আধিকারিকদের সরাসরি রিপোর্ট করতে বলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রের তৈরি একটি সরকারি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জেলাস্তরের আধিকারিকদের যুক্ত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। আর এই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তেই ক্ষুব্ধ নবান্ন। রাজ্যের মতে, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী এবং রাজ্যের উপর একপ্রকার ‘প্রশাসনিক দখলদারি’।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের অধীনে থাকা কিছু কর্মসূচির খতিয়ান জানাতে জেলা কৃষি আধিকারিকদের সরাসরি রিপোর্টিংয়ের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। শুধু তাই নয়, ওই রিপোর্ট যাতে নবান্নে আসার আগেই কেন্দ্রের আধিকারিকদের কাছে পৌঁছে যায়, সেজন্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে দ্রুত রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া “এটি একেবারেই অনুচিত এবং দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত। কৃষিক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ দেশের প্রথম সারির রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে। তাহলে কেন্দ্র ঠিক কোন নজরদারি করতে চাইছে? নিয়ম মেনে সহযোগিতা করলে আমরা বাধা দিই না। কিন্তু সরাসরি হস্তক্ষেপ কখনোই বরদাস্ত করা হবে না।”
আরও পড়ুন
নবান্নের প্রশাসনিক আধিকারিকদের মতে, কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপ রাজ্যের প্রশাসনিক পরিকাঠামোকে পাশ কাটিয়ে একপ্রকার নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার চেষ্টা। এই ঘটনা কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের চিরাচরিত প্রথা ভেঙে দেওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসনের একাংশ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না থামলে কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে নিরপেক্ষ এবং সম্মানজনক কাজের পরিবেশ বিঘ্নিত হবে, এবং রাজনৈতিক উত্তেজনাও বাড়তে পারে। আপাতত এই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে নবান্ন কী পদক্ষেপ করে সেদিকেই তাকিয়ে প্রশাসনিক কর্তারা।