সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়– নদীমাতৃক বাংলার জল যন্ত্রণার জন্য ফের দিভিসিকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, “কেউ নিজেদের বাঁচানোর জন্য জল ছেড়ে খালাস হয়ে যাচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বারবার বলার পরেও, ডিভিসি, পাঞ্চেত কেউ কথা শুনছে না। কেন্দ্রীয় সরকারকে খনন শুরুর আবেদন করা হলেও কাজের কাজ হয়নি। একদিকে বৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে ২৭ হাজার লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর আক্ষেপ, ” ১৪ বছর ধরে লড়াই করছি। কোনও ফল পাওয়া যাচ্ছে না। আমি নিজে চিঠি দিয়েছি প্রধানমন্ত্রীকে। ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিলের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কিছুতেই কথা কানে যাচ্ছে না। জনগণের ক্ষতি হচ্ছে। আসাম টাকা পাচ্ছে, আমরা পাচ্ছি না। ভোটের অপর কাজ জনগণের সেবা করা। কিন্তু যা হচ্ছে তা হল জনগণের জন্য পরিষেবা না দিয়ে নিজেদের পরিষেবা দেওয়া। দুঃখিত, কিন্তু বলতে হচ্ছে।”
মূলত, এই মরশুমে বর্ষা একটু আগেই শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে মানুষের দুর্ভোগও বেড়েছে। তাই নিচু জমি ও কাঁচা মাটির বাড়িগুলির প্রতি বাড়তি নজর দিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, বামফ্রন্ট আমলে এই ধরনের সমস্যায় প্রচুর মানুষ মারা গেছেন। জেলা প্রশাসনকে মুখমন্ত্রীর নির্দেশ, ” মাইকিং করে লো-ল্যান্ডের মানুষদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনতে হবে। যতদিন না পর্যন্ত তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারবেন এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু করতে পারবেন ততদিন পর্যন্ত ত্রাণ সামগ্রী বিলি করতে হবে।
সাপে কাটার ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখতে হবে। বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়ে যাতে অসুবিধা না হয় তার জন্য দেখতে হবে বিদ্যুত দপ্তরকে। ঝড়-বৃষ্টি চলাকালীন গাছের তলায় দাঁড়াবেন না। সিইএসসি কেও বলতে হবে।” মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়ে দেন, প্রতি জেলায় তিনজন করে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি দিয়ে একটা টিম তৈরি করতে হবে। সব জেলায় এই টিম তৈরি হবে। যে সমস্ত জেলায় প্রতিবার প্লাবিত অঞ্চল দেখতে বিভিন্ন মন্ত্রী যান তারা যাবেন।
স্থানীয় প্রশাসন ও বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের দল। দলমত নির্বিশেষে সমস্ত দল ও সাধারণ মানুষের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন,” রাস্তায় বিল্ডিং মেটেরিয়াল পরে রয়েছে, ড্রেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই সময়টা সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে আবেদন করব, সরকারের সাথে সহযোগিতা করুন মানুষের সঙ্গে সহযোগিতা করুন।”
