৩,০০০ কোটি টাকার ঋণ প্রতারণা ও অর্থ পাচার মামলায় শিল্পপতি অনিল আম্বানিকে তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরট। আগামী ৫ আগস্ট তাঁকে দিল্লিতে ইডির সদর দপ্তরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি মুম্বইয়ের একাধিক জায়গায় অনিল আম্বানির সংস্থার সঙ্গে জড়িত ঠিকানা ও অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। ২৪ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২৭ জুলাই পর্যন্ত মোট ৩৫টির বেশি জায়গায় চলে এই অভিযান। এরপরেই ইডি অনিল আম্বানিকে সমন পাঠায়।
ইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ইয়েস ব্যাংক-এর মাধ্যমে অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপ-এর একাধিক সংস্থাকে প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়। এই ঋণ বেআইনিভাবে অন্যত্র সরানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী ব্যাংকের নীতিমালাও লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবি করছে ইডি। সন্দেহ করা হচ্ছে, ঋণের বিনিময়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ঘুষও দেওয়া হয়েছে।
রিলায়েন্স পাওয়ার-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইডির তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছে এবং করবে। এই তদন্তের ফলে সংস্থার ব্যবসা, কর্মী বা শেয়ারহোল্ডারদের কোনও ক্ষতি হবে না বলেও জানানো হয়েছে। তারা দাবি করেছে, এই তদন্ত মূলত রিলায়েন্স কমিউনিকেশন্স ও রিলায়েন্স হোম ফাইনান্স লিমিটেডের পুরনো লেনদেনকে ঘিরে। রিলায়েন্স কমিউনিকেশন্স ইতিমধ্যেই দেউলিয়া হয়ে দীর্ঘদিন ধরে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে, আর রিলায়েন্স হোম ফাইনান্স লিমিটেড সম্পর্কিত বিষয় সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।
রিলায়েন্স পাওয়ার-এর আরও দাবি, তারা রিলায়েন্স কমিউনিকেশন্স বা রিলায়েন্স হোম ফাইনান্স লিমিটেড-এর সঙ্গে কোনও ব্যবসায়িক বা আর্থিকভাবে যুক্ত নয় এবং অনিল আম্বানি এই সংস্থার বোর্ডেও নেই। ফলে এই তদন্তের কোনও প্রভাব রিলায়েন্স পাওয়ার-এর উপর পড়বে না।
ইডি-র তদন্তে আরও উঠে এসেছে, রিলায়েন্স মিউচুয়াল ফান্ড প্রায় ২,৮৫০ কোটি টাকা ইয়েস ব্যাঙ্ক-এর AT1 বন্ডে বিনিয়োগ করেছিল, যা পরবর্তীতে বাতিল হয়ে যায়। ইডির দাবি, এই লেনদেনও সন্দেহজনক এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের টাকাই এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বিষয়ে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনও পৃথক তদন্ত করছে। এই পুরো মামলার ভিত্তি মূলত সিবিআই-এর দুটি এফআইআর, জাতীয় আবাসন ব্যাঙ্ক, সেবি, ন্যাশনাল ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং অথরিটি এবং ব্যাঙ্ক অফ বরোদা-র রিপোর্টের উপর নির্ভর করছে।
উল্লেখ্য, গত বছর সেবি অনিল আম্বানি এবং রিলায়েন্স হোম ফাইনান্স লিমিটেড-এর ২৪ জন প্রাক্তন আধিকারিককে পাঁচ বছরের জন্য শেয়ার বাজার থেকে নিষিদ্ধ করে। সেইসঙ্গে অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে ২৫ কোটি টাকার জরিমানাও করা হয়। মোট জরিমানার অঙ্ক দাঁড়ায় ৬২৫ কোটি টাকারও বেশি। অনিল আম্বানিকে ইডির দপ্তরে হাজিরা দিতে হবে আগামী ৫ আগষ্ট, আপাতত নজর সেদিকেই।
