ডিম শরীরের পক্ষে কতটা ভালো তা নিয়ে নানা মতভেদ আছে। অনেকেই মনে করেন প্রতিদিন ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে বিশেষ করে হার্টের পক্ষে ভালো নয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন সম্পূর্ণ উল্টো কথা। তাঁরা জানিয়েছেন, ডিম কখনওই হার্টের পক্ষে ক্ষতিকর নয়। বরং ডিম একটি সুষম খাদ্য। ডিম কখনওই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় না। ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল আছে এটা ঠিক, কিন্তু সেই কোলেস্টেরল কখনওই হৃদরোগের আশঙ্কা বৃদ্ধি করে না। ডিমে থাকা কোলেস্টেরল হার্টের জন্য উপকারী হাই ডেনসিটি কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে।
দীর্ঘ গবেষণার পর পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, ডিমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। তবে, যাঁদের হার্টের কোনও সমস্যা আছে তাদের ডিমের কুসুম পরিমিত খাওয়া উচিত।
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথের তরফে জানানো হয়েছে, ডিমে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে। এই প্রোটিন হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী। কারণ ডিমে লুটেইন এবং জেক্সানাথিন নামে ২টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়। এই ট্রাইগ্লিসারাইড হৃদরোগের অন্যতম কারণ। পাশাপাশি ডিমে থাকা অন্যান্য পুষ্টিগুণ স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
পুষ্টিবিদরা আরও জানিয়েছেন,
ডিমের কুসুমে থাকা কোলেস্টেরল হার্টের পক্ষে উপকারী। এই কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তাই সুস্থ মানুষের পাতে প্রতিদিন একটি বা দুটি ডিম থাকা উচিত। তবে যাদের হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে, তাদের খুব বেশি ডিমের কুসুম খাওয়া ঠিক নয়। বরং পরিমাণ মতো ডিম খাওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলছেন, ডিমে আছে অতি উচ্চমানের প্রোটিন।এই প্রোটিন মস্তিষ্ক আর পেশি গঠনে সাহায্য করে। দেহের ক্ষয় সামলাতেও সাহায্য করে। ডিমে থাকা কিছু অ্যামাইনো অ্যাসিড মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
তবে ডিম নিয়ে মানুষের মনে আজও ভুল ধারণা রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, ডিম খেলে হজমের সমস্যা হয়। অনেকেই বলেন, হাঁসের ডিমে বাত বাড়ে। সর্দিকাশিও বড়িয়ে তোলে ডিম। কিন্তু পুষ্টিবিজ্ঞানীরা এইসব অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, প্রোটিনের সবচেয়ে জোরদার ও স্বাভাবিক উৎস হল ডিম।
প্রসঙ্গত পুষ্টিবিদদের একাংশের অভিমত অনুসারে এই প্রতিবেদন। শারীরিক সমস্যা থাকলে ডিম কতটা খাবেন সেটা নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই জরুরী।