প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা যদি গুরুতর অপরাধে গ্রেফতার হয়ে টানা ৩০ দিন হেফাজতে থাকেন, তাহলে তাঁদের পদচ্যুত করার বিধান রেখে সংসদে তিনটি বিতর্কিত বিল পেশ করতেই লোকসভায় সৃষ্টি হয় চরম বিশৃঙ্খলা।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিলগুলি উপস্থাপন করার পরপরই বিরোধী দলের সাংসদরা বিলের অনুলিপি ছিঁড়ে ফেলেন এবং একযোগে সংসদের ওয়েলে নেমে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
অমিত শাহ বিরোধীদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “আমরা এতটা নির্লজ্জ হতে পারি না যে গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত হয়েও সাংবিধানিক পদ আঁকড়ে থাকব।” তিনি জানান, বিলগুলি সংসদের যৌথ কমিটিতে পাঠানো হবে, যেখানে দুই কক্ষের সদস্যরা প্রস্তাব ও পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
এআইএমআইএম-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, কংগ্রেসের মনীষ তিওয়ারি ও কেসি বেণুগোপাল-সহ একাধিক বিরোধী সাংসদ বিলটির তীব্র বিরোধিতা করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, এই আইন সংবিধান ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী।
অবিরাম হট্টগোলের মাঝে প্রথমে অধিবেশন দুপুর ৩টা পর্যন্ত, পরে ৫টা পর্যন্ত মুলতুবি করা হয়।
সংবিধান সংশোধনী(১৩০তম) বিল ২০২৫ সহ বিতর্কিত তিনটি বিল অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী যদি এমন কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হন যার শাস্তি কমপক্ষে পাঁচ বছরের জেল, এবং তাঁরা টানা ৩০ দিন জেলে থাকেন, তাহলে ৩১তম দিনে তাঁদের পদ থেকে অপসারণ করা হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং তামিলনাড়ুর মন্ত্রী ভি সেন্টিল বালাজি গ্রেফতার হওয়ার পরও পদত্যাগ করেননি।
বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, সরকার এই বিলগুলির মাধ্যমে ‘গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ধ্বংস করে পুলিশি রাষ্ট্রে’ পরিণত করতে চাইছে। তাঁরা এই বিলকে “কঠোর ও দমনমূলক” আখ্যা দিয়েছেন।
বিলগুলির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য একটি ৩১ সদস্যের সংসদীয় যৌথ কমিটি গঠন করা হচ্ছে, যা পরবর্তী অধিবেশনের আগে রিপোর্ট জমা দেবে।