কলকাতায় এসে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় রাজনৈতিক লড়াইয়ের সুর অনেকটাই বেঁধে দিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একদিকে বাংলায় তৃণমূলের জামানায় তিনি যেমন আকাশছোঁয়া দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তেমনই বঙ্গে উন্নয়নের আহ্বান জানিয়ে ‘বাংলার উদয়, বিকশিত ভারতের জয়’-এর কথা শুনিয়ে গেছেন। তবে মোদির এমন বার্তা আসতে না আসতেই রে রে করে মাঠে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একের পর এক ইস্যুতে সরব হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে মোদির বক্তৃতা ও অভিযোগের বিরুদ্ধে পর পর তোপ দাগেন। দুর্নীতি ইস্যুতে শুভেন্দু অধিকারীর নারদ স্টিং অপারেশনের গোপন ক্যামেরার তথ্য সামনে এনে বিজেপি-র বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দাগে তৃণমূল। মোদি আগে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করার সাহস দেখিয়ে অন্যদের দিকে আঙুল তুলবেন বলে কটাক্ষও করা হয়।
শশী পাঁজা বলেন, “একদিকে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন যে তিনি বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে গর্বিত। অথচ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষী অভিবাসী শ্রমিকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।“
বিতর্কিত তিন বিল নিয়েও সরব হন তিনি। কোন অধিকারে সংবিধানের ১৩০তম সংশোধনী বিল আনতে চাইছে কেন্দ্র তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে রাজ্যের শাসক দল। শশী পাঁজা বলেন, “১৩০তম সংবিধান (সংশোধনী) বিলটি রাতারাতি সংসদে আনা হল, সেশন শেষ হতে আর মাত্র একদিন বাকি থাকতে। এই বিলের মাধ্যমে মোদি দেখাতে চাইছেন যে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু এটি কি সত্যিই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই? নাকি বিরোধী নেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তাঁদের দলে ভেড়ানোর এক কৌশল? তিনি কি দুর্নীতি দূর করতে চাইছেন, নাকি বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে চাইছেন?”
মোদির মেট্রো প্রকল্প উদ্বোধন নিয়ে সরব হন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন “প্রধানমন্ত্রী আজ যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করেছেন সেগুলির মূল পরিকল্পনা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেট্রোর সম্প্রসারণের স্বপ্ন ছিল দিদির। তিনি তা কল্পনা করেছিলেন, পরিকল্পনা করেছিলেন, অর্থও জোগাড় করেছিলেন। এখন নির্বাচনের আগে এসে প্রধানমন্ত্রী শুধু ভোট চাইতে ও কৃতিত্ব নিতে হাজির হয়েছেন।”
অনুপ্রবেশ ইস্যুতেও কেন্দ্রের নীতি নিয়ে সরব কুণাল। তাঁর মন্তব্য, “আজকে নরেন্দ্র মোদি নিজেই যেন অমিত শাহ-এর প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করলেন। তিনি দাবি করলেন যে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সীমান্ত পাহারা দেয় বিএসএফ, যা সরাসরি অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে, সেক্ষেত্রে এটা কী করে সম্ভব?”
