প্রতিদিনের মতো ২০ অগস্ট বিকেলেও কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন কানপুরের এক তরুণী। বাড়ির কাছাকাছি এলাকায় তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে রাস্তার বেশ কয়েকটি কুকুর। ক্ষতবিক্ষত করে দেয় ওই তরুণীকে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ওই কলেজ পড়ুয়া তরুণীকে উদ্ধার করে। গুরুতর জখম ওই ছাত্রীকে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। তার মুখে ১৭টি সেলাই পড়ে। কানপুরের শ্যামনগর এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।
আহত তরুণীর নাম বৈষ্ণবী সাহু। তিমি বিবিএর ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী। ছাত্রীর পরিবার জানিয়েছে, প্রতিদিনের মতো ২০ অগস্ট বৈষ্ণবী কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি এলাকায় রাস্তার কয়েকটি কুকুর ও হনুমানের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছিল। সে সময় আচমকাই কয়েকটি পথপুকুর বৈষ্ণবীর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বৈষ্ণবীর নাক, মুখ ও গলায় কামড় দেয়। বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা করলেও ওই পথকুকুরদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি ওই ছাত্রী। তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে বৈষ্ণবীকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে ছুটে আসে তার বাড়ির লোকজন। দ্রুত তাকে স্থানীয় কাশীরাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা ওই তরুণীর মুখে ১৭ টি সেলাই করেন। ঘটনার পর এখনও চোখে মুখে আতঙ্ক বৈষ্ণবীর। তার কাকা আশুতোষ জানিয়েছেন, ভাইঝি এখনও কোনও খাবার খেতে পারছে না। এমনকী, কথাও বলতে পারছে না। কোনও রকমে পাইপের সাহায্যে তাঁকে তরল খাবার খাওয়ানো হচ্ছে।
এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে বৈষ্ণবীর পরিবার। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে পথকুকুরদের সমস্যা সমাধানে হস্তক্ষেপ করুক সরকার। ভবিষ্যতে আর কারও সন্তানকে যাতে এভাবে বিপদের মুখে পড়তে না হয় তার জন্য অবিলম্বে পথকুকুরদের উপযুক্ত জায়গায় রাখার আর্জি জানিয়েছেন আশুতোষ।
পথকুকুর নিয়ে গোটা দেশ উত্তাল। দিল্লির একাধিক জায়গায় গত কয়েক মাসে পথকুকুরের আক্রমণে বহু মানুষ আহত হয়েছেন। প্রথমে দিল্লি হাইকোর্ট, পরে সুপ্রিম কোর্টে মামলা যায়। একাধিক শুনানি হয় সেই মামলার। সমস্ত পথকুকুরকে বন্দি করার নির্দেশ দেয় আদালত। ঝাঁপিয়ে পড়ে বহু পশুপ্রেমী সংগঠন এবং একাধিক সেলেব। অভিনেতা জন আব্রাহাম তো সরাসরি দেশের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লেখেন। রায় পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন। তাঁর অনুরোধে কর্ণপাত করে আদালত। ফের শুনানি হয় অন্য বেঞ্চে। পথকুকুরদের নির্বীজকরণ করে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। রাস্তাঘাটে যেখানে সেখানে পথকুকুরদের খাওয়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই আবহেই ফের পথকুকুরের সাঙ্ঘাতিক আক্রমণ। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন কানপুরের কলেজ ছাত্রী।