বিতর্কিত সংবিধান সংশোধনী(১৩০তম) বিল মূল্যায়ন করার জন্য গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিল আরও একটি বিরোধী দল। তৃণমূল কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির পর এবার আম আদমি পার্টি (আপ) ঘোষণা করল যে, তারা এই কমিটিতে কোনও সদস্য পাঠাবে না।
আপ রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিং অভিযোগ করেন, “নরেন্দ্র মোদি সরকার এই আইন আনছে দুর্নীতি রোধের জন্য নয়, বরং বিরোধী নেতাদের মিথ্যা মামলায় জেলে ভরতে এবং নির্বাচিত সরকারকে ভেঙে দিতে। যারা দুর্নীতির মূল হোতা, তারাই আবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিল আনছে! এই বিলের উদ্দেশ্য কেবল বিরোধী দলগুলিকে ধ্বংস করা। এই কারণেই অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং আম আদমি পার্টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে অংশগ্রহণ না করার।”
তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লেখেন,
“আরও দল মোদি সরকারের সাজানো নাটককে চিনে ফেলছে। এই জেপিসি আসলে একটি স্টান্ট।”
রবিবার নিজের ব্লগে তিনি লেখেন, “যৌথ সংসদীয় কমিটি একসময় স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু ২০১৪-র পর থেকে এর উদ্দেশ্য অনেকটাই লঘু হয়ে গেছে। এই বিলটি আসলে অসাংবিধানিক, আর জেপিসি গঠন শুধুমাত্র ভোট চুরির অভিযোগ থেকে মনোযোগ ঘোরানোর চেষ্টা।”
একই দিনে সপা সভাপতি অখিলেশ যাদবও স্পষ্ট করেন, “সমাজবাদী পার্টি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে। আমরা জেপিসি-র অংশ হব না।”
বাদল অধিবেশন শেষ হওয়ার একদিন আগে, গত ২০ অগাস্ট লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তিনটি বিল উত্থাপন করেন। বিল অনুযায়ী— প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা যদি গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে টানা ৩০ দিন কারাবন্দি থাকেন, তবে তাঁদের পদ থেকে সরানো যাবে। বিরোধী দলের ব্যাপক বিক্ষোভের পরই বিষয়টি যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিরোধী শিবিরের একাধিক দল ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে যে তারা জেপিসি-তে সদস্য পাঠাবে না। এখনও পর্যন্ত তৃণমূল, সপা এবং আপ বয়কট করেছে। প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস একই পথে হাঁটবে কিনা, সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।
আগামী শীতকালীন অধিবেশনে যৌথ সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট লোকসভায় পেশ করার কথা। যদিও সংবিধান সংশোধনী বিল পাস করানোর জন্য প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সাংসদের সমর্থন সরকারের কাছে নেই। তার আগেই যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠক যদি গোটা বিরোধী শিবির বয়কট করে, তাহলে এই বিল বিজেপির কাছে বাড়তি বিড়ম্বনার কারণ হবে। এমনটাই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
