নিক্কি ভাটি হত্যাকাণ্ডে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০১৬ সালে একই সঙ্গে বিপিন ও রোহিতের বিয়ে হয়েছিল। বিপিন বিয়ে করেছিল নিক্কিকে এবং রোহিত বিয়ে করেছিল তার দিদি কাঞ্চনকে। বিপিন ও রোহিত দুই ভাই কোনও কাজ করত না। তাদের বাবার একটি মুদিখানা দোকান আছে। সেখানেই তারা কাজ করত। জানা গিয়েছে, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই বিপিন ও রোহিত তাদের শ্বশুরবাড়ি থেকে পণের দাবি জানাতে থাকে। এই দাবি ক্রমশ বেড়ে চলে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিনই রাতে বাড়ির বাইরে দীর্ঘ সময় কাটাত দুই ভাই। স্ত্রীরা এ বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করলে তাদের উপর চলত চরম নির্যাতন। নিজেদের জীবন বাঁচাতে নিক্কি ও কাঞ্চন একটি পার্লার খুলেছিল। কিন্তু দুই ভাইয়েরই পছন্দ ছিল না যে তাদের স্ত্রীরা স্বাধীনভাবে কোনও কাজ করুক। এমনকী নিক্কি ইনস্টাগ্রামে বিভিন্ন রিল পোস্ট করলে তা নিয়েও শুরু হত অশান্তি।
নিক্কির কাকা জানিয়েছেন, তাঁরা বিয়েতে যৌতুক হিসেবে একটি স্করপিও গাড়ি, একটি রয়েল এনফিল্ড মোটরসাইকেল, ৫০০ গ্রাম সোনা ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে জিনিসপত্র দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও তাদের আশা মেটেনি। নিক্কির বাবার একটি মার্সিডিজ গাড়ি রয়েছে। সম্প্রতি বিপিন দাবি করে, তাকেও একটি মার্সিডিজ গাড়ি দিতে হবে। কিন্তু সেই মার্সিডিজ গাড়ি না দেওয়ায় নিক্কির উপর অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়ে।
নিক্কির ভাই জানিয়েছে, তারা ভেবেছিল হয়ত এই সমস্যা আস্তে আস্তে মিটে যাবে। কিন্তু একের পর এক জিনিস পাওয়ার পরেও বিপিন, রোহিতের আশা মেটেনি। বরং তাদের দাবি আরও বাড়তে থাকে। তাদের দুই বোন পার্লার চালিয়ে যে রোজগার করত সেই টাকাও তারা ছিনিয়ে নিত। সেই টাকা দিয়ে দুই ভাই নিয়মিত মদ্যপান করত। এমনকী, বাইরে অন্য মহিলার সঙ্গে সময় কাটাত।
নিক্কির কাকার দাবি, জন্মাষ্টমীর দিন অত্যাচারের খবর পেয়ে তাঁরা নিক্কির বাড়িতে গিয়েছিলেন। ওই দিন শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফের আশ্বাস দিয়েছিল ভবিষ্যতে আর কখনও এরকম হবে না। কিন্তু তারপরেও অত্যাচার কমেনি। বরং বাপের বাড়িতে খবর দেওয়ার কারণে অত্যাচার আরও বেড়েছিল।
নিক্কির দিদি কাঞ্চনের দাবি, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার বোনকে বেধড়ক পিটিয়েছিল বিপিন এবং তার মা। বিপিনের মা বলছিল, ওকে একদম মেরে ফেল। এরপরই মারধরের মাত্রা আরও বাড়তে থাকে। সে বাধা দিতে গেলে তাকেও মেরে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর পরেই গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বিপিন। নিক্কির ছয় বছরের ছেলে ওইদিনের ঘটনার পর এখনও আতঙ্কে রয়েছে। কথা বলতেও ভয় পাচ্ছে সে। ছয় বছরের সেই নাবালকও জানিয়েছে, তার বাবাই মায়ের গায়ে আগুন লাগিয়েছে।
