গত মার্চ মাসে ট্রাম্পের শুল্কনীতি যখন এশিয়ার সুপার পাওয়ার চিনকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করে চলেছে তখনই ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা অনেকটাই ঠিক করে ফেলেছে বেজিং। মার্কিন মিডিয়া ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সেইসময় চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে একটি ‘গোপন’ চিঠি পাঠান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় কর্মকর্তার থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ব্লুমবার্গ দাবি করে যে তাতে ভারত চিনের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে সাজাতে আগ্রহী কি না তা জানতে চাওয়া হয়। বার্তাটি দ্রুত পৌঁছে যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে এবং তারপরেই দিল্লিতে শুরু হয়ে যায় রোডম্যাপ তৈরির কাজ। গত মার্চে ট্রাম্প চিনা পণ্যের ওপর দ্বিগুণ শুল্ক চাপানোর পর শি নিজেই বলেন, “হাতি আর ড্রাগনের একসঙ্গে নাচাই একমাত্র সঠিক পথ।”
জানা যাচ্ছে সেই নোটে শি জিনপিং উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন সম্ভাব্য মার্কিন-ভারত চুক্তি নিয়ে, যা বেজিংয়ের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে জুন মাস থেকে মোদি সরকার চিনের এই বার্তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে শুরু করে। এই সময়েই পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামানো নিয়ে ট্রাম্পের ‘মধ্যস্থতা’র দাবি খারিজ করে দিল্লি।
এর পরে বৃত্তটি সম্পূর্ণ করে দেয় ভারতের উপর চাপানো ট্রাম্পের বিশাল শুল্ক। ভারত ও চিন সম্মত হয় ২০২০ সালের সীমান্ত সংঘর্ষ পেরিয়ে এগিয়ে যেতে এবং পুরনো সীমান্ত-বিতর্ক নিয়ে আলোচনার গতি বাড়াতে।
এটা বলা যেতেই পারে, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ও বৃহৎ অর্থনীতির প্রধান ডোনাল্ড ট্রাম্পের একচেটিয়া শুল্ক আরোপের পর আরও কাছাকাছি আসতে চলেছে দিল্লি ও বেজিং। চিনা বিদেশমন্ত্রীর সদ্য ভারত সফরের পর এবার চিন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর জিনপিংয়ের চিঠির প্রেক্ষাপটে মোদির এই চিন সফর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।