জাপান সফরে গিয়ে এক বিশেষ উপহার পেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জাপান সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী উপহার হিসেবে পেলেন সে দেশের বিখ্যাত দারুমা ডল বা দারুমা পুতুল। জাপান সফরে গিয়ে মোদি শোরিনজান দারুমা জি মন্দিরে গিয়েছিলেন। সেখানেই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সেইসি হিরোসে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এই দারুমা ডল তুলে দেন। জাপানে এই দারুমা ডলকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, কি এই দারুমা ডল বা কেন এর এত জনপ্রিয়তা?
জাপানের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এই দারুমা ডল দেখা যায়। এমনকি সে দেশের বিভিন্ন দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রেস্তোরাঁতেও তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সম্পন্ন এই পুতুলের দেখা মেলে। জাপানিদের বিশ্বাস, এই পুতুল সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি ও ধনসম্পদের প্রতীক। দারুমা শব্দটি এসেছে বোধি ধর্ম থেকে। জনশ্রুতি, ধর্মপ্রচার করতে এসে বুদ্ধদেব এখানে নাকি ৯ বছর একটানা ধ্যান করেছিলেন। ফলে তাঁর হাত ও পা ক্ষয়ে গিয়েছিল। তাই এই পুতুলের আকারও হাত-পা বিহীন মানুষের মতো। রয়েছে শুধু ধড় ও মাথা।
লোককথায় বলা হয়, ধ্যানের সময় যাতে ঘুম না আসে তাই বুদ্ধ নিজের চোখের পাতাও ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। তাই এই পুতুলের চোখ বড় বড় আর তীক্ষ্ণ।
নিয়ম মেনে সাধারণত লাল রঙে তৈরি হয় দারুমা ডল। বলা হয় এশিয়ায় একসময় মহামারির আকার নিয়েছিল বসন্ত। সেই সময় লাল রঙ দিয়েই দেবতার কাছে প্রার্থনা করা হত। সেই বিশ্বাস থেকেই লাল দারুমার প্রচলন। তবে আজকাল অবশ্য বিভিন্ন রঙের দারুমা ডল পাওয়া যায়। জানা গিয়েছে জাপানের সর্বত্র এই পুতুলের কদর থাকলেও এর ৮০ শতাংশই তৈরি হয় তাকাসাকি শহরে। এই পুতুলের বৈশিষ্ট্য হল, যেভাবেই একে ঠেলে ফেলে দেওয়া হোক না কেন সে ফের উঠে দাঁড়ায়। জাপানিরা যে কোনও শুভ অনুষ্ঠান, এমনকি বর্ষবরণের উৎসবেও এই পুতুল কিনে থাকেন। বর্তমানে এই পুতুল জাপানের সংস্কৃতির অঙ্গে পরিণত হয়েছে। অনেকেই এই পুতুলকে ইচ্ছাপূরণের মাধ্যম বলেও মনে করেন। তাই মোদির হাতে জাপানের এই বিশেষ উপহার তুলে দেওয়া নিছক স্মৃতিচিহ্ন নয় বরং সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি ও দীর্ঘ জীবনের প্রতীক বলেও মনে করা হচ্ছে।
Leave a comment
Leave a comment