আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও গোটা বিশ্বে কুটনৈতিক সমীকরণ বদলের ক্ষেত্র হিসেবে চিনের এসসিও সম্মেলনের মঞ্চ একটা ল্যান্ডমার্ক হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিন সফরের সাফল্য যে প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে তার অন্যতম উদাহরণ হিসেবে উঠে আসতে পারে আমেরিকা থেকে হঠাৎ আসা বার্তা। সোমবার চিনের তিয়ানজিনে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন সম্মেলনে মোদি-পুতিন বৈঠকের মিনিট কয়েক আগেই দিল্লিকে “২১ শতকের নির্ধারিত সম্পর্ক” বলল আমেরিকা।
কিন্তু কী লেখা হয়েছে আমেরিকার সেই বার্তায়? মার্কিন দূতাবাসের এক্স হ্যান্ডেল থেকে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও তাঁর বার্তায় বলেন, “আমাদের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছচ্ছে। এ মাসে আমরা মানুষ, অগ্রগতি এবং সম্ভাবনাগুলোর উপর আলোকপাত করছি যা আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। উদ্ভাবন, উদ্যোগ, প্রতিরক্ষা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক— এই যাত্রার চালিকাশক্তি হল দুই দেশের জনগণের স্থায়ী বন্ধুত্ব।” মার্কিন দূতাবাস এক্স-এ রুবিওর বক্তব্য উদ্ধৃত করে এই পোস্ট মোদি-পুতিন বৈঠকের মিনিট কয়েক আগেই প্রকাশ করে।
কিন্তু কেন এই পোস্ট? আসলে এসসিও সম্মেলনে চিন ও রাশিয়ার এভাবে ভারতমুখী হওয়াতেই বিপাকে আমেরিকা। দিল্লির উপর বিশাল ট্যারিফ চাপিয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতকে দূরে সরানোরই লক্ষ্য ছিল ওয়াশিংটনের। কিন্তু সেই শুল্কবাণ যে আসলে এরকম বুমেরাং হয়ে ফিরবে তা সম্ভবত কল্পনাও করতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নয়াদিল্লি আগেই জানিয়েছিল, ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই আমদানি। মার্কিন শুল্ককে দিল্লি “অন্যায়, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করে।
এসসিও সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রেসিডেন্ট পুতিনকে একসঙ্গে হাঁটতে, হাত ধরতে এবং পরে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রাণবন্ত আড্ডায় মেতে উঠতে দেখা গেছে। পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে একসঙ্গে একই গাড়িতে সফরও করেছেন মোদি ও পুতিন। কাজেই সব মিলিয়ে বার্তাটি স্পষ্ট যে দিল্লি ওয়াশিংটনের চাপের কাছে নতিস্বীকার করবে না। বরং বন্ধুত্বের আসন টলছে আমেরিকার। বহু-মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বে নিজের জায়গা শক্ত করার পথেই এগোচ্ছে দিল্লি।
