মেট্রো লাইনের ফিডার সার্ভিস হিসেবে চালু হোক কলকাতার ট্রাম। মহানগরীর প্রাচীনতম গণপরিবহণকে ঘিরে এমনই পরামর্শ নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা দলের বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের বক্তব্য, একমাত্র ট্রামই হল এমন এক পরিবেশবান্ধব যান, যেখানে উঠলে অনেক বেশি যাত্রী তাঁদের গন্তব্যের মেট্রো স্টেশনে পৌঁছতে পারবে নিশ্চিন্তে।
কলকাতার ধুঁকতে থাকা ট্রামকে পুনরুজ্জীবিত করার দাবি দীর্ঘদিনের। দেড়শো বছরেরও বেশি (১৫২ বছর) টিকে থাকা মহানগরীর গণপরিবহণ যানকে ঘিরে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক যুক্তিই খাড়া করা হয়েছে। কিন্তু তা থেকে সদর্থক কিছু পদক্ষেপ এখনও পর্যন্ত করা হয়নি। ফলে গতির শহরে পিছিয়েছে ট্রাম। যানজট আর দুর্ঘটনার কারণ দেখিয়ে অনেক রাস্তা থেকেই তুলে নেওয়া হয়েছে ট্রাম লাইনও। কোথাও আবার পিচ ঢেলে মুছে ফেলারও চেষ্টা চলছে।
কলকাতা শহরে খাতায় কলমে এখন মাত্র দুটি রুটেই ট্রাম চালু। শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলা (রুট ৫) এবং গড়িয়াহাট থেকে ধর্মতলা (রুট ২৫)। দুটি রুটের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ১০ থেকে ১২টি ট্রাম। অথচ ডিপোগুলিতে কিন্তু পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে ২৫০ টিরও বেশি ট্রাম।
মহানগরীর রাস্তায় ট্রাম ফিরিয়ে আনার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টেও মামলা হয়েছে আগে। নাগরিক সংগঠনের করা সেই মামলায় তখনকার প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ছিল, “ট্রাম রাজ্যের ঐতিহ্য। তা তুলে দেওয়া খুব সহজ কাজ। কিন্তু রাজ্যকে ট্রাম বাঁচাতে উদ্যোগ নিতে হবে”। আদালতের সেই পর্যবেক্ষণেও কিন্তু হাল ফেরেনি কলকাতার ট্রামের।
ট্রামকে ঘিরে রাজ্য প্রশাসনের অনীহা দূর করতে নগর উন্নয়ন পরিকল্পনায় জড়িত বিশেষজ্ঞরা এবার মেট্রো রেলের ফিডার সার্ভিসের কথা তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, যখন সারা পৃথিবী দূষণমুক্ত পরিবেশবান্ধব যান ব্যবহার করার উপর অনেক বেশি জোর দিচ্ছে, তখন ট্রামের মতো টেকসই পরিবেশবান্ধব যানকে তুলে দেওয়ার যৌক্তিকতা কোথায়।
