মহালয়ার আগে আর একটামাত্র রবিবার পড়ে। তার আগের রবিবার কলকাতার বড় বড় মলগুলোতে ভিড় থাকলেও, দোকানদার ও খুচরো বিক্রেতারা জানিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহান্তে চেনা ভিড় ও বিক্রি বাড়বে বলে তাঁরা আশা করছেন। সাধারণত দুর্গাপুজোর আগে মানুষের মধ্যে চূড়ান্ত শপিং উন্মাদনা দেখা যায়, তা এখনও সেভাবে চোখে পড়েনি।
সাউথ সিটি মলে শনিবার দুই বড় দোকান শপার্স স্টপ ও প্যান্টালুনস ১ কোটিরও বেশি টাকার জিনিসপত্র বিক্রি করেছে। অন্যদিকে, মলের রেস্তোরাঁগুলো মিলিয়ে প্রায় ৯০ লাখ টাকা আয় করেছে। তবে সূত্রের খবর, এই অঙ্ক ২০২৩ সালের সমান। গত বছর আরজি কর ধর্ষণ-খুন মামলাকে ঘিরে আন্দোলনের কারণে মলগুলোতে ভিড় ও বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল।
একজন মলকর্তা জানিয়েছেন, “গত বছর বিক্রি জমেছিল দুর্গাপুজোর মাত্র দুই সপ্তাহ আগে। এবারও আমরা আশা করছি ১৫ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভিড় বাড়বে। এখন স্টেডি শপিং চলছে, কিন্তু পুজোর আগের সেই জমজমাট পরিবেশ এখনও আসেনি।”
সাউথ সিটি মলে ঘুরতে আসা দুই বোন জানালেন, আমরা পুজোয় থাকব না। তবে মা-বাবার চেয়ে দিদির সঙ্গে শপিং করতে বেশি ভাল লাগে। আমার বেশিরভাগ শপিং অনলাইনেই হয়ে গেছে।” বন্ধুর সঙ্গে সিনেমা দেখতে এসেছিলেন এক যুবক। তাঁর কথায়, “আমার পুজোর অর্ডারগুলো মহালয়ার পর দেব।” একজন বললেন, “এটাই আমার প্রথম ছুটি, আর আবহাওয়া গরম হলেও পুজোর আমেজ ইতিমধ্যেই জমে উঠছে।”
সিটি সেন্টার ১ (সল্টলেক) ও সিটি সেন্টার ২ (নিউ টাউন)-এ ভিড় ভাল হলেও খুব বেশি নয়। এক কর্মকর্তা জানান, এবছর এন্ড অফ সিজন সেল ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলেছে। সাধারণত ১৫ আগস্ট শেষ হয়। ফলে দুর্গাপুজোর অফার ঘোষণায় দেরি হয়েছে। অম্বুজা নিয়োটিয়ার ডিরেক্টর রমেশ পাণ্ডে জানালেন, “যখন অফার ঘোষণা হবে, তখনই ভিড় বাড়বে। নতুন স্টক ইতিমধ্যেই দোকানে এসেছে, যা ক্রেতাদের টানবে।”
কোয়েস্ট মলে এখন মেকওভার চলছে। নতুন ফুড কোর্ট জমজমাট হলেও খুচরো বিক্রিতে এখনও সেই উন্মাদনা নেই। মল সিইও সঞ্জীব মেহরা জানান, “এবার পুজো আগে পড়েছে আর বর্ষাও বেশি হয়েছে। আমরা অর্ধেক সংস্কার-কাজ শেষ করেছি। আগামী বছর সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকব।”
মার্লিন গ্রুপের কর্পোরেট রিটেল ও হসপিটালিটি জেনারেল ম্যানেজার শুভদীপ বসু জানালেন, “অ্যাক্রোপলিস মলে এখনও আসল পুজো শপিং জমেনি। সম্ভবত এন্ড অফ সিজন সেল দেরিতে শেষ হওয়া আর স্কুলে অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার কারণে। তবে ভিড় ২০২৩ সালের তুলনায় ১০% আর ২০২৪ সালের তুলনায় ৫% বেড়েছে। আমরা ২৯ আগস্ট থেকে পুজো শপিং ক্যাম্পেইন শুরু করেছি। এবার বড় ভিড় আশা করছি।”
সাউথ সিটির একটি স্টোরের এক কর্মী বললেন, “এখনও বিক্রি আমাদের প্রত্যাশা মতো হয়নি। তবে আমরা আশাবাদী, আগামী সপ্তাহ থেকে অবস্থার উন্নতি হবে। ক্রেতারা এখন শীতের পোশাক আর উজ্জ্বল উৎসবের রঙিন পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন।”
সব মিলিয়ে শহরের মলগুলো এখনও পুজোর ভিড়ের আসল রূপ দেখেনি। তবে খুচরো বিক্রেতা থেকে শুরু করে মল কর্তৃপক্ষ সবারই আশা, আগামী সপ্তাহেই পুজো শপিংয়ের আসল উন্মাদনা শুরু হবে।
