ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাছের মানুষ সেবাস্তিয়ান লেকর্নুকে দায়িত্ব দিতেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ফ্রান্স।নিয়োগের দিনই দেশজুড়ে রাস্তাঘাট অবরোধ, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বুধবার প্যারিসসহ একাধিক শহরে বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরোধ করে।গাড়িতে আগুন লাগায়, পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রথম কয়েক ঘণ্টাতেই প্রায় ২০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সদ্য ফরাসি আইনসভার ৫৭৭ জন সদস্যের মধ্যে ৩৩১ জনের বিরুদ্ধ ভোট পেয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন ফ্রাঁসোয়া বেরু। গত কয়েক বছর ধরে মানুষের জীবনযাত্রার খরচ লাগাতার বেড়ে চলায় তাঁর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল অতি-ডানপন্থী ন্যাশনাল র্যা লি।পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতেই বেরু নিজেই অনাস্থা ভোটের সিদ্ধান্ত নেন। শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতেই হয় বেরুকে। অথচ গত বছরের ৪ ডিসেম্বর আস্থাভোটে পরাজিত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাইকেল বার্নিয়ের। তারপর দায়িত্ব নেন ফ্রাঁসোয়া বেরু।
ফ্রাঁসোয়া বেরু অনাস্থায় হারতেই সেবাস্তিয়ান লেকর্নুকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।কিন্তু নিয়োগের পরই বিক্ষোভ শুরু হয়ে নতুন প্রধানমন্ত্রীর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।‘ব্লক এভরিথিং’ বা সবকিছু বন্ধ করো এমন নামের এই আন্দোলনে আসলে দেশজুড়ে অবরোধ ও ধর্মঘটের চেষ্টা করা হয়।যদিও তা পূর্ণ মাত্রায় সফল হয়নি। সরকার প্রায় ৮০,০০০ পুলিশ মোতায়েন করলেও বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর চালায় ও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পশ্চিমের রেন শহরে একটি বাসে আগুন লাগানো হয়েছে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে বিদ্যুতের লাইনে ক্ষতির কারণে ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। তবে এই আন্দোলনের স্বতঃস্ফূর্ততা “ইয়েলো ভেস্ট” আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
সোমবার জাতীয় সংসদে আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর হেরে যাওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে নতুন করে সংকটের আবহ তৈরি হয়েছে। ম্যাক্রোঁর প্রেসিডেন্ট থাকাকালে সপ্তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ৩৯ বছর বয়সী লেকর্নু গত তিন বছর ধরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। নতুন নিয়োগকে মধ্যপন্থী সহযোগীরা স্বাগত জানালেও বামপন্থীরা মেনে নিতে পারছেন না।
Leave a comment
Leave a comment