সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ২৬টি অ্যাপ নিষিদ্ধকরণ এবং দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে নেপালে টানা কয়েকদিন ধরে চলা হিংসাত্মক বিক্ষোভে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিনেন্দ্র রিজাল জানিয়েছেন যে, রাজনৈতিক দলগুলোর আত্মতুষ্টি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতাই এই বিক্ষোভের পেছনে মূল কারণ।
রিজাল এক সাক্ষাৎ করে বলেন, “আমার সমবেদনা নিহতদের পরিবারের প্রতি। আশা করি এখন আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে মন দেব এবং তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সাহায্য করতে পারব।”
গত মঙ্গলবার দুই দিন ধরে তীব্র বিক্ষোভের পর সেনাবাহিনী রাজধানী কাঠমান্ডুর নিয়ন্ত্রণ নেয়। রাষ্ট্রপতির বাসভবন ও সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ হয়। প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করে পালাতে হয়। বিক্ষোভকারীরা বিশেষত রাজনৈতিক নেতাদের পরিবারের বিলাসবহুল জীবনযাপনকে নিশানা করে।
যদিও সরকার পরবর্তীতে ২৬টি অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়, তবুও বিক্ষোভ চলতে থাকে। দুর্নীতি ও বেকারত্বের মতো ব্যাপক অসন্তোষই আন্দোলনকে তীব্রতর করে তোলে।
ড. রিজাল বলেন, “সরকার জনগণের আস্থা হারিয়েছে। এখন বার্তাটি বোঝা জরুরি, বার্তাবাহককে শাস্তি দেওয়া নয়। আমি, আমার দল বা সরকারকে রাজি করাতে পারিনি। কিন্তু দেশকে এগিয়ে যেতেই হবে। আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে, এমনকি যদি তাতে কারও প্রাণও যায়।”
নিজের দল নেপালি কংগ্রেস সহ পুরনো রাজনৈতিক দলগুলোর ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের আপাতত নীচু স্বরে থাকতে হবে। সমাধানের অংশীদার হতে হবে, তবে সেই সমাধান অবশ্যই সংবিধানের স্বীকৃত পথে হতে হবে। সৃজনশীল সমাধান খুঁজতে হবে। ‘জেন-জেড’ যে নেতৃত্ব বেছে নেবে, আমরা তাকেই সমর্থন করব। ভবিষ্যতের নেতা অবশ্যই সংবিধানকে রক্ষা করবেন। এই সংবিধান চার প্রজন্মের দীর্ঘ সংগ্রামের ফল। বহু মানুষ তাঁদের জীবন ও স্বপ্ন উৎসর্গ করেছেন এর জন্য।”
প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, “পুরনো রাজনৈতিক দলগুলো ভবিষ্যতে যুব সমাজের নির্ধারিত নেতৃত্বকে সমর্থন করবে যদি তারা জাতীয় স্বার্থে কাজ করে এবং জনগণের আস্থা ফিরে পেতে পারে। আমাদের আপাতত কোনও উচ্চাকাঙ্ক্ষা রাখা উচিত নয়, যতক্ষণ না আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তি পুনর্গঠন করতে পারি,” তিনি মন্তব্য করেন।