পুজোকে ঘিরে টলিউডে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে সরব হলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর দাবি, চারটি ছবি ‘রক্তবীজ ২’, ‘রঘু ডাকাত’, ‘দেবী চৌধুরানী’ ও ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’-কে সমান সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও একটি ‘প্রভাবশালী’ ছবি শুরুর দিন থেকেই বাড়তি শো পাচ্ছে। এর ফলে অন্য ছবিগুলিকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ।
কুণাল ঘোষ ফেসবুক পোস্টে নাম না করে দেব অভিনীত ‘রঘু ডাকাত’–এর প্রসঙ্গ টেনে লিখেছেন, “পুজোয় চারটে সিনেমাই প্রথম সপ্তাহে সমান সুযোগ পাক। তারপর দর্শকের সাড়া অনুযায়ী হল মালিকরা সিদ্ধান্ত নিক। কিন্তু শুরু থেকেই যদি একটি ছবিকে বাড়তি শো দেওয়া হয়, তবে এর প্রতিবাদ হবেই।”
নাম না করে দলেরই সাংসদ-অভিনেতাকে কি নিশানা করেছেন কুণাল? এর আগেও একাধিক ইস্যুতে কুণাল-দেব মতানৈক্য সামনে এসেছে। পরে অবশ্য দেব-রুক্মিনীর ছবির প্রচারে সে দূরত্ব ঘুচতে দেখা গেছে। দেবের আরও একটা ধামাকা ছবি রিলিজ করবে পুজোয়। তার আগে ফের আসরে কুণাল। নাম না করে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ।
কুণালের অভিযোগকে পাল্টা দিতে তেড়েফুঁড়ে নেমেছেন প্রযোজক রানা সরকার। তিনি তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করেন, তিনি কুণাল ঘোষকে ফলো করেন না। তাঁর বক্তব্য, “কুণাল ঘোষ কথা বললে সেটা কেন গুরুত্ব পাচ্ছে?” পাশাপাশি কুণালের সিনেমা জগৎ নিয়ে মন্তব্য করার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রানা।
রানার পাল্টা আক্রমণে খেপেছেন কুণাল। নিজের ফেসবুক পোস্টে কুণাল ব্যক্তিগত সুরে রানা সরকারকে নিশানা করেন। প্রশ্ন তোলেন, সরকারের বিরুদ্ধে যারা লাগাতার কুৎসা করে, তাঁদের নিয়েই কেন ছবি প্রযোজনা হচ্ছে? মিঠুন চক্রবর্তীর নাম টেনে তিনি রানা সরকারের সিদ্ধান্তকে ব্যঙ্গও করেন। তবে কুণাল আরও একধাপ এগিয়ে রানার পোস্টের জবাব দিয়েছেন। তাঁর দাবি, দর্শক হিসেবেই বাংলা ছবির সমর্থনে কথা বলেন তিনি। টেলিফিল্ম পরিচালনা, পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি প্রযোজনা ও সেন্সর বোর্ড–ইমপার সদস্য থাকার অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেন।
বেশ কিছুদিন ধরে টলিউডের স্বাস্থ্য বড় একটা ভাল নেই। পরিচালক-টেকনিশানদের দ্বন্দ্ব বারবার মাথাচাড়া দিয়েছে। ক্ষতি হয়েছে বাংলা সিনেমার। সমস্যা মেটাতে হস্তক্ষেপ করতে হয় খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে। প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়, গৌতম ঘোষরা মমতার সঙ্গে দেখাও করেন। যখনই ভাবা হয়েছে বরফ গলছে, ঠিক তখনই কোন্দল তুঙ্গে উঠেছে। অভিনেতা-পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্য তো আরও এককাঠি এগিয়ে গেছেন। ঝগড়াঝাটি করে টলিউডে কাজটাই হারিয়েছেন। নিজের মুখে স্বীকারও করে নিয়েছেন সে কথা। ‘রঘু ডাকাত’-এ তিনি অভিনয় করেছেন। তবে তার পর থেকে তাঁকে নাকি আর কেউ ডাকছেন না।
এই পরিস্থিতিতে পুজোর মুখে ছবি রিলিজ নিয়ে ফের বিতর্ক উসকে দিলেন কুণাল ঘোষ। মূল প্রশ্ন এখন একটাই, পুজোয় চার ছবিকে কি সত্যিই সমান সুযোগ দেওয়া হচ্ছে? নাকি নেপথ্য প্রভাবেই শুরু থেকেই একটি ছবি বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে?
