বর্তমানে পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম রোগটি ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এই রোগের কারণ মূলত শরীরে হরমোনের ভারসাম্যগত সমস্যা ।এই রোগে মহিলাদের ওভারিতে প্রচুর ছোট ছোট সিস্ট হয়। সাধারণভাবে দেখা যায় বয়সন্ধিকালে এই রোগটি দেখা দিচ্ছে। তবে কারোর কারোর কুড়ির কোঠায় বা মাঝ বয়সে এই রোগ দেখা দিচ্ছে এমন উদাহরণও বিরল নয়। কিন্তু সম্প্রতি একটি প্রশ্ন উঠেছে কোন মেয়ের মাসিক পিরিয়ডস শুরু হওয়ার আগে কি পিসিওসের উপসর্গ থাকতে পারে? উত্তরটা শুনলে আপনি চমকে যাবেন– হ্যাঁ পারে।
মুম্বইয়ের স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দীপালি লোধ জানান কোন মেয়ের প্রথম পিরিয়ডস শুরু হওয়ার আগে এমনকী তার শৈশব যখন শেষ হচ্ছে কিংবা বয়সন্ধিকালের সন্ধিক্ষণে পিসিওসের উপসর্গগুলি থাকতে পারে আর এরকম কয়েকটি উপসর্গের কথা তিনি বলেছেন যেগুলি থাকলে মা-বাবাকে অতি অবশ্যই সতর্ক হতে হবে–
১. যদি কোন মেয়ের দেখেন সময়ের আগে পিউবারটি হয়ে যাচ্ছে মানে তার স্তন ডেভেলপ করছে পিউবিক হেয়ার দেখা দিচ্ছে তাহলে কিন্তু মাকে সতর্ক হতে হবে। হতে পারে এটা পিসিওএসের প্রাথমিক উপসর্গ।
২. দ্বিতীয়ত অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি। অনেক সময় দেখা যায় কোনও কারণ ছাড়াই মেয়েদের বয়সন্ধিতে পড়া মাত্র অস্বাভাবিক হারে ওজন বাড়তে শুরু করেছে। এটা কিন্তু সবসময় শুধুমাত্র ওবেসিটি বা অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ফলে হয় না। যদি দেখেন আপনার মেয়ের পেটের মধ্যভাগে মেদ জমতে শুরু করেছে এবং সে ক্রমশ ওবেস হয়ে পড়ছে তাহলে সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে।
৩. পিসিওএস হওয়ার অন্য একটি উপসর্গ হল ত্বকের সমস্যা। ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়ে যাওয়া, ত্বকের মধ্যে ব্রণ বের হওয়া ইত্যাদি সমস্যাগুলি থাকলে ফেলে না রেখে চিকিৎসকের কাছে যান যদি না আপনার মেয়ের পিরিয়ডস শুরু হয়ে থাকে ।
৪. এছাড়াও যদি দেখেন শরীরে অতিরিক্ত লোমের আধিক্য হচ্ছে বিশেষ করে গলায় , ঘাড়ে বা পিঠে তাহলে কিন্তু সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে।এগুলিও পিসিওএস-এর লক্ষণ।
সমীক্ষা বলছে পিসিওএস এমন একটি রোগ যা জিনবাহিত হতে পারে মানে মায়ের থাকলে মেয়েরও হতে পারে । তবে হবেই যে এমন কোন কথা নেই অবশ্য হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে ।কাজেই কোনও মহিলা যদি পিসিওএসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং তাঊর মেয়ের যদি উপরোক্ত উপসর্গগুলি দেখা দেয় তাহলে কিন্তু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
তবে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই । ডক্টর দীপালি বলছেন এখন পিসিওসের নানা রকম উন্নত চিকিৎসা বেরিয়ে গেছে তার মধ্যে আছে হরমোনাল চিকিৎসা । এছাড়াও নানারকম উন্নত ওষুধ বাজারে এসেছে। তবে তিনি বারবার সতর্ক করছেন উপসর্গগুলিকে কিন্তু ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। না হলে কিন্তু পরে গিয়ে সমস্যা বাড়তে পারে।
এছাড়া পিসিওএস কমাতে একজন অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে সঠিক ডায়েট করা এবং এমন এক্সারসাইজ করতে হবে, যাতে ওজন কমবে, এই দুটি মাস্ট। সঙ্গে করতে হবে স্ট্রেস মানেজমেন্ট । স্ট্রেস কমলেই পিসিওএস অনেকখানি কমবে। এর জন্য নির্ভর করতে হবে সঠিক যোগ ব্যায়ামের ওপর।
তবে সব ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা জরুরি।
Leave a comment
Leave a comment
