শারদোৎসবের প্রাক মুহূর্তে ভোজনরসিক বাঙালিদের জন্য সুখবর। বেনাপোল-পেট্রাপোল পেরিয়ে ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশি ইলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাজারে বাজারে পদ্মার রুপোলি শস্যের দেখা মিলেছে বিস্তর। পদ্মার ইলিশ আসার খবর পেতেই মাছ বাজারে ঢুঁ মারছেন অপেক্ষায় থাকা অত্যুৎসাহীর দল। তবে আমদানিকৃত সেই ইলিশের দাম বেশ চড়া। পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি দাম ছিল ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা। যা খুচরো বাজারে বিকোচ্ছে ১৭০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা করে।
মঙ্গলবার রাত থেকেই উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ সংলগ্ন পেট্রাপোল সীমান্তে পৌঁছেছিল কমবেশি ৫০ টন ইলিশ। বাংলাদেশের বেনাপোল সীমান্ত হয়ে ইলিশভর্তি ট্রাকগুলি ঢুকেছে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে। কাস্টমস বিভাগের নিয়মাফিক ছাড়পত্র মেলার পর সেই ইলিশ চলে এসেছে কলকাতা ও হাওড়ার মাছ বাজারে।
বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দু-দেশের সম্পর্ক আর আগের মতো নেই। তাছাড়া বাণিজ্য ঘিরেও একাধিক বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। তার মধ্যেও পুজোর আগে ভারতে এল বাংলাদেশের ইলিশ। বন্দরের ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে ইলিশ রফতানি করবে বাংলাদেশ। বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের মাছ ব্যবসায়ীদের আবেদনে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ সরকার তাদের ৩৭ জন রফতানিকারকে ১২০০ টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তথা হাওড়া পাইকারি ফিশ মার্কেটের সচিব সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ সেতুবন্ধনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দুর্গাপুজোর সময় ভারতে ইলিশ রফতানি চালিয়ে যেতে বাংলাদেশের মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তিনিই প্রথম আবেদন করেছিলেন।
পেট্রাপোলোর ক্লিয়ারি এজেন্টদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথম লটে প্রায় ৩৭,৪৬০ কেজি ইলিশ নিয়েছিল ১০টি ট্রাক। বুধবার থেকে আমদানিকৃত ইলিশের পরিমাণ আরও বেড়েছে। এদিকে বাংলাদেশি ইলিশ আসার খবর পেতেই কলকাতায় অগ্রিম বুকিং-এর জন্য জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। মহানগরীর ফিশ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, উৎসবের মরসুমে বাংলাদেশি ইলিশের চাহিদা ব্যাপক। তাঁদের বেশ কিছু গ্রাহক ইতিমধ্যেই ইলিশ কিনতে অগ্রিম বুকিংও করে ফেলছেন।
বাংলাদেশি ইলিশের ব্যাপক চাহিদা বাংলায় থাকলেও খুব বেশি কিন্তু এবার মিলবে না। কারণ চলতি মরসুমে তুলনায় অনেক কম উঠেছে পদ্মার ইলিশ। তাই বাংলাদেশের রফতানিতে ছাড়পত্র পাওয়া ১২০০ টনের মধ্যে বাংলায় কতটুকু আসবে তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। সুতরাং পদ্মার রুপোলি শস্যকে উৎসবের দিনগুলিতে হেঁশেলে ঢোকাতে, অনেকটাই বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে মাছে-ভাতে বাঙালিকে।
