
কলকাতার রাস্তায় এখনো হাতে-টানা রিকশা চলাচল করছে, তবে এই ঐতিহ্যবাহী পরিবহণ মাধ্যমটি ক্রমেই বিপন্ন হয়ে পড়েছে। শহরের হাজার হাজার মানুষ যেটির ওপর রুটিন আয় নির্ভর করছে, সেটি আজ অস্তিত্ব সংকটে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছে ‘অল বেঙ্গল রিকশা ইউনিয়ন’। সংগঠনটি মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি পাঠিয়ে রিকশাচালকদের পেশার উন্নয়ন এবং আয়ের নতুন পথের বন্দোবস্ত করার অনুরোধ করেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, কলকাতায় বর্তমানে প্রায় ছয় হাজার হাতে-টানা রিকশাচালক রয়েছেন, যাদের জীবিকা ক্রমেই ঝুঁকির মুখে পড়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের উদাহরণ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্রে রিকশাগুলিকে ই-রিকশায় রূপান্তর করার সঙ্গে সঙ্গে ছয় মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং আর্থিক সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কলকাতা সরকারও যদি এমন একটি বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তবে শহরের ঐতিহ্য ও রিকশাচালকদের জীবন দুইই সুরক্ষিত থাকবে।
সংগঠনটির দাবি, হাতে-টানা রিকশা শুধু পরিবহণের একটি মাধ্যম নয়, এটি কলকাতার ইতিহাস এবং সংস্কৃতির অঙ্গ। রিকশাচালকদের পাশে দাঁড়ানো মানে শহরের ঐতিহ্য রক্ষা করা। মোক্তার আলি সহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তারা আশা করছেন রাজ্য সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং রিকশাচালকদের জীবনযাত্রা উন্নয়নের পথে সহায়তা করবে।
রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে সবদৃষ্টি এখন তাকিয়ে। হাতে-টানা রিকশার রূপান্তর বা সংরক্ষণে যে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হলে, শুধু রিকশাচালক নয়, পুরো শহরের ঐতিহ্যও বাঁচানো সম্ভব হবে। এই বিষয়ে রিকশা চালকদের সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের মধ্যে সমর্থন ও উদ্বেগ সমানভাবে রয়েছে।
কলকাতার রাস্তায় এখনও চলমান এই ঐতিহ্যবাহী যানবাহনটি সংরক্ষণ করা শুধু ঐতিহাসিক মূল্য নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তারও বিষয়।
