জাপানকে পেছনে ফেলে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে ভারত, জানিয়ে দিলেন নীতি আয়োগের সিইও বি ভি আর সুব্রহ্মণ্যম। শনিবার নীতি আয়োগের ১০তম গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিং করতে গিয়ে একথা জানিয়েছেন তিনি।তিনি আরও বলেন, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভারতের অনুকূলে রয়েছে।
শনিবার তিনি জানান, ভারত জাপানকে পেছনে ফেলে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে।তিনি বলেন, “আমি এই মুহূর্তে বলছি, আমরা এখন ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম। এটা আমার ডেটা নয়, এটা আইএমএফ-এর ডেটা। আজ ভারত জাপানের চেয়ে বড়।”
সুব্রহ্মণ্যম আরও বলেন, “ বর্তমানে ভারত জাপানকে ছাড়িয়ে গেছে। এখন শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন ও জার্মানিই ভারতের থেকে বড়। যদি আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোই, তাহলে আগামী আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যে আমরা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হব।”
মিন্ট ডট কমের দেওয়া তথ্য বলছে আইএমএফ-এর এপ্রিল মাসের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে ভারতের জিডিপি প্রায় ৪.১৮৭ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে, যা জাপানের অনুমানিক জিডিপি (৪.১৮৬ ট্রিলিয়ন ডলার) থেকে সামান্য বেশি। ২০২৪ পর্যন্ত ভারত ছিল বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। আইএমএফ-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী দুই বছরে ভারত হবে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতি।
ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ডের তথ্য বলছে ২০২৫ সালে ভারতের অর্থনীতি ৬.২% এবং ২০২৬ সালে ৬.৩% হারে বৃদ্ধি পাবে, যা বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক গড়ের চেয়ে অনেক বেশি। অন্যদিকে, আইএমএফ বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধি ২০২৫ সালে ২.৮% এবং ২০২৬ সালে ৩.০% হবে বলে অনুমান করেছে, যা ভারতের তুলনায় অনেক কম।
নীতি আয়োগের সিইও বি ভি আর সুব্রহ্মণ্যমের বিশ্লেষণ অনুযায়ী ভারতের অর্থনীতি দ্রুত বাড়ছে এবং দেশের জনসংখ্যাগত সুবিধে বা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড থাকায় তা বৃদ্ধিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। তার মতে, “ভারত এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে দ্রুত উন্নতি হতে পারে… আমাদের আগামী ২০-২৫ বছর ধরে জনসংখ্যাগত সুবিধা থাকায়, প্রধানমন্ত্রী সব রাজ্যকে তাদের স্তর থেকে ভিশন ডকুমেন্ট প্রস্তুত করার আহ্বান জানিয়েছেন। ভারতের বৃদ্ধিতে ইতিমধ্যেই এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে।”
নীতি আয়োগের বিশ্লেষণ এই অগ্রগতির পেছনে রয়েছে শক্তিশালী নীতি ও পরিকল্পনা, বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ এবং প্রযুক্তিখাতে উদ্ভাবনী উদ্যোগ। আগামী বছরগুলোতে ভারত যদি এই গতিবেগ ধরে রাখে, তাহলে শীর্ষ তিন অর্থনীতির তালিকায় নাম লেখানো সময়ের ব্যাপার মাত্র।
Leave a comment
Leave a comment
