দিব্যেন্দু ঘোষ
অফেন্স ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স। টোটাল ফুটবলের বীজমন্ত্র। বাঁচতে গেলে আক্রমণ করো। সেই মন্ত্রেই দীক্ষিত হতে হয় মেয়েটাকে। বিদেশ বিভূঁই, পুরুষতন্ত্রের শোষণ, একলা লড়াই। দিনের পর দিন নির্যাতন, শারীরিক, মানসিক। রুখে দাঁড়াতেই হত। টাকা পয়সা, পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছে বিজনেস পার্টনার। নিঃস্ব, সহায় সম্বলহীন। ইয়েমেনে ক্লিনিক তৈরির স্বপ্ন, স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাচ্ছে। স্বামী, সন্তান, পরিবার ছেড়ে লড়ছেন ভারতীয় যুবতী, একা। দেশের অনুকূল পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে বিজনেস পার্টনার। দিনের পর দিন মানসিক অত্যাচার। অবশেষে শেষ অস্ত্র প্রয়োগ। ঘুমের মধ্যে কড়া ডোজের ঘুমের ইনজেকশন। ডোজটা বেশি হয়ে যায়।
মৃত্যু ইয়েমেনের ব্যবসায়ী তালাল আবদো মাহদির। শরীরে মাদক ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। আরেকজন নার্সকে সঙ্গে নিয়ে তালালের দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ মেয়েটির বিরুদ্ধে। ২০২০ সালে ইয়েমেনি ব্যবসায়িক অংশীদার তালালকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত কেরলের পালাক্কাড়ের নার্স নিমিশা প্রিয়া। ইয়েমেন সুপ্রিম কোর্টে মৃত্যুদণ্ড। প্রায় আট বছর সানার জেলে বন্দি। নিমিশার পরিবারের কাতর আবেদন খারিজ।
প্রিয়াকে বাঁচাতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সেভ নিমিশা প্রিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকশন কাউন্সিলের মামলা। মোদি সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা নিমিশার পরিবারের। বিদেশ মন্ত্রকের পদক্ষেপ। কূটনৈতিক স্তরে ভারতের চেষ্টা। ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ, সানায় ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ, আদর্শগতভাবে হুথি গোষ্ঠীর প্রতি পাকিস্তানের সমর্থন সত্ত্বেও নিমিশাকে ন্যায় দেওয়ার চেষ্টা ভারতের। পরিবারের আবেদনে কূটনৈতিক সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাল ভারত। এক শীর্ষ সুন্নি ধর্মগুরুর নাটকীয় এন্ট্রি। ১৬ জুলাই ইয়েমেনে ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি স্থগিত।
জাজবাত বাংলায় আরও পড়ুন
নেপথ্যের লড়াই চিত্তাকর্ষক। গ্র্যান্ড মুফতির অসাধ্য সাধন। তালালের পরিবারকে ‘ব্লাড মানি’ নিতে রাজি করিয়ে ফেলা। কী এই ‘ব্লাড মানি’? ইয়েমেনের শরিয়ত আইনে টাকার বিনিময়ে শাস্তি থেকে রেহাই পেতে পারে অপরাধী। নিহতের পরিবার টাকা নিতে রাজি হলে, টাকার পরিমাণ দোষীর পরিবার দিতে সন্মত হলে, শাস্তি রদ। প্রাথমিকভাবে প্রায় আট কোটি টাকা চেয়েছিল তালালের পরিবার। এত টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না নিমিশার পরিবারের। অতএব মুক্তি নেই। প্রাণদণ্ড। কিন্তু শেষে সেই ‘ব্লাড মানি’-তেই বাজিমাত। শীর্ষ সুন্নি নেতা কান্থাপুরম এপি আবুবকর মুসলিয়ারের মাস্টারস্ট্রোক।
অন্যতম মধ্যস্থতাকারী সমাজসেবী ও বিমান পরামর্শদাতা স্যামুয়েল জেরোম ভাস্করণ। আল ওয়াসাবের শাসক আবদুল মালিক আল নেহায়া দেখা করেন ইয়েমেন প্রেসিডেন্ট রাশদ আল আলিমির সঙ্গে। তারপরেই ফাঁসি স্থগিত। তবে মধ্যস্থতা বৈঠকের বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা ইয়েমেন সরকারের। শুধু সরকারি নয়, অসরকারি স্তরেও ভারতের নিরন্তর চেষ্টা। এক প্রভাবশালী শেখের সঙ্গেও যোগাযোগ করে ভারত। তালালের পরিবার, ইয়েমেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে রাজি করানোর অনুরোধ, শেষ চেষ্টার আবেদন।
ইয়েমেনি ইসলামিক শিক্ষাবিদ শেখ উমর বিন হাফিজের মাধ্যমে তালালের ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন মুসলিয়ার। কেরলে মুসলিয়ারের সংগঠনের হেডকোয়ার্টারে একটা অফিসও খোলা হয় গোটা প্রক্রিয়া তদারকির জন্য। তালালের পরিবারের সঙ্গে মধ্যস্থতায় ছিলেন ইয়েমেন সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতিও। একটি ট্রাস্ট ‘ব্লাড মানি’ হিসেবে তালালের পরিবারকে এগারো কোটি টাকা দিতে প্রস্তুত। এর আগে এই ট্রাস্ট ২০০৬ সালে ‘ব্লাড মানি’ দিয়ে সৌদির জেল থেকে ছাড়িয়ে আনে কেরলের আবদুল রহিমকে।
নিমিশাকে বাঁচাতে ১৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও লেখেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ১৪ জুলাই কেরলের রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন নিমিশার স্বামী টমি থমাস। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ চান্ডি ওমেন। ভিডিয়ো কলে নিমিশার মায়ের সঙ্গেও কথা বলেন রাজ্যপাল। কেন্দ্রকে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করেন। গত বছর ইয়েমেনের জেলে গিয়ে মেয়েকে দেখে আসেন মা প্রেমা কুমারী। মেয়ের কষ্ট দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। হাতজোড় করে কেরলের রাজ্যপালকে অনুরোধ করেন মেয়েকে বাঁচাতে। নিমিশার পরিবার ‘ব্লাড মানি’ হিসেবে তালালের পরিবারকে শেষ পর্যন্ত প্রায় আট কোটি ষাট লক্ষ টাকা দিতে রাজি হয়েছে।

তালালের সঙ্গে কীভাবে জড়ালেন নিমিশা? ঠিক কী হয়েছিল? একটা ফাঁসি ঘিরে কেনই বা তোলপাড় আন্তর্জাতিক মিডিয়া?
ইয়েমেনে ভারতের কারও পক্ষে একা একা ক্লিনিক খোলা সম্ভব নয়। ইয়েমেন আইনে বাধা। ইয়েমেনের নিয়ম অনুযায়ী, দেশীয় কোনও অংশীদারি ছাড়া কোনও বিদেশি নাগরিক সেদেশে ব্যবসা শুরু করতে পারবে না। সেই কারণেই তালালকে নিজের ব্যবসায়িক পার্টনার করেন নিমিশা। সেই সূত্র ধরেই ২০১৫ সালে খোলা হয় ক্লিনিক। তার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় মতবিরোধ। এই সময় ইয়েমেনে একাই ছিলেন নিমিশা। পারিবারিক কারণে তাঁর স্বামী ও মেয়েকে ফিরে আসতে হয় ভারতে।
নিমিশার অভিযোগ, প্রথম দিকে ব্যবসা ভাল চললেও, পরে বিবাদ তৈরি হয়। তাঁর টাকা, পাসপোর্ট কেড়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন মাহদি। এমনকি, তাঁকে মাদক সেবনেও বাধ্য করা হত। পাশাপাশি, ব্যবসার কাগজপত্র সইয়ের সময় অবৈধভাবে বিভিন্ন কাগজপত্রে সই করিয়ে নিমিশাকে নিজের স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে প্রশাসনিক সাহায্য পাওয়ার পথও বন্ধ করে দেন তালাল। ইয়েমেন পুলিস কোনও সাহায্য করেনি। বাধ্য হয়েই তাঁকে থাকতে হয় মাহদির সঙ্গে।
ইউটিউবেও জাজবাত, আপডেট থাকুন আমাদের সঙ্গে
২০১৭ সাল ২৫ জুলাই। মাহদির হাত থেকে বাঁচতে মাহদিকে ঘুমের ওষুধ দিয়ে নিজের পাসপোর্ট উদ্ধার করেন। কিন্তু ওষুধের ওভারডোজের কারণে মৃত্যু হয় মাহদির। তখন দেহ লোপাটে তা টুকরো টুকরো করে বাড়ির জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন নিমিশা। ইয়েমেন ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আগেই নিমিশাকে গ্রেফতার করে পুলিস। পাঠানো হয় রাজধানী সানার জেলে। ২০১৮ সালে দোষী সাব্যস্ত হন নিমিশা। ২০২০ সালে শোনানো হয় মৃত্যুদণ্ডের সাজা। ২০২৩ সালে সেই সাজা বহাল রাখে হুথিদের ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’। এরপরই শুরু হয় নিমিশাকে বাঁচানোর লড়াই। পদে পদে বাধা ভারতের। ইয়েমেনে ভারতের কোনও প্রতিনিধি নেই। একটা গোষ্ঠী সেখানে শরিয়ত আইনে সরকার চালাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ অবস্থাও ভাল নয়। সেই দেশের সঙ্গে সমঝোতা কীভাবে হবে?
ভারতের সুপ্রিম কোর্টে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি সরকারের অক্ষমতার কথা তুলে ধরেন। কারণ, ভারত ইয়েমেনের স্বাধীনতার সময় সমর্থন করলেও, তাদের স্বীকৃতি দিলেও ইয়েমেন কূটনৈতিকভাবে ভারতকে স্বীকৃতি দেয়নি। এখানে আরেকটা সম্ভাবনা ছিল। নিমিশা প্রিয়াকে যদি হুথি-নিয়ন্ত্রিত সানার পরিবর্তে সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত আদেনে রাখা হত, তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত। তবে ‘রক্তের টাকা’ একটি ব্যক্তিগত আলোচনা। সরকারকে তার নির্ধারিত সীমার বাইরে কাজ করতে বলা যাবে না। ইয়েমেনে চলা গৃহযুদ্ধের কারণেই প্রিয়া এতদিন ন্যায় বিচার পাননি। তিনি কার্যত ‘যুদ্ধের শিকার’। বিচারের সময় তাই তাঁর পর্যাপ্ত আইনি প্রতিরক্ষার অভাব ছিল।
আজ ইয়েমেন ভারতকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি না দিলেও ইয়েমেনের স্বাধীনতায় ভারতের গভীর ভূমিকা ছিল। ১৯৬৭ সালের নভেম্বরে দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তার আগে ইয়েমেন যুক্তরাজ্যের অধীন ছিল। সেই সময় ভারত ইয়েমেনের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়। সৌদি আরবের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং পাকিস্তানের সঙ্গে ইয়েমেনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ার ফলে দুদেশের সম্পর্কে শীতলতা আসতে থাকে। ১৮৩৯ সালে এডেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। তখন এটি শাসিত হত বম্বে প্রেসিডেন্সির মাধ্যমে। সে সময় এডেনে প্রায় ২ হাজার ভারতীয় সৈন্য পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তারা এডেনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৮৫৫ সালে বম্বে থেকে এডেন স্টিমার চালু হয়। ভারতের সঙ্গে আরব উপদ্বীপের সংযোগ ঘটে।

১৯০৬ সালে ব্রিটিশ শাসকরা ভারত থেকে ইঞ্জিনিয়ারদের পাঠায়। তাঁদের এডেনে পাঠানোর উদ্দেশ্য ছিল একটি ভূগর্ভস্থ নিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি করা, সেখানে পরিস্রুত জল সরবরাহের পরিকল্পনা করা এবং তা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা এবং অন্যান্য বিষয় বিশ্লেষণ করা। এর মধ্যে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। ভারত নিরপেক্ষ অবস্থান নেয়। সে সময় ভারত তার সমস্ত নাগরিককে ফেরত নিয়ে যায়। তবে একাধিক ভারতীয় চিকিৎসক এবং নার্স ইয়েমেনে থেকে যান।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের মানুষকে তাঁরা চিকিত্সা পরিষেবা দেন। ১৯৯৪ সালের জুলাই মাসে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইয়েমেন সরকার ভারতের কাছে যুদ্ধে আহত ১৫০ জনকে ভারতের বম্বের হাসপাতালে ভর্তি এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ করে। ভারত দ্রুত সাড়া দেয়। যুদ্ধাহত মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় ভারতে। ২০১৫ সালে সৌদি আরব ইয়েমেনে আগ্রাসন চালায়। উদ্দেশ্য, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহ দমন করে শান্তি প্রতিষ্ঠা। সেই সময়ে ইয়েমেনে ৪৬৪০ জনের বেশি ভারতীয় নাগরিক আটকে পড়েন। তখন ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ইয়েমেনে ‘অপারেশন রাহাত’ নামে একটি অপারেশন চালায়। এর লক্ষ্য ছিল আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করা। ভারতের চালানো এই অপারেশন ছিল সফল। ভারত তার ৪৬৪০ নাগরিককে উদ্ধার করে আনে। পাশাপাশি ভারতের সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বের ৪১টি দেশের ৯৬০ জন নাগরিককেও উদ্ধার করে। এর পর থেকেই ভারতের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব পোষণ করতে থাকে হুথি-নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেন সরকার। তা সত্ত্বেও ২০২৪ সালে ঐতিহাসিক কূটনৈতিক সফরে ইয়েমেনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করে ভারত।
আরও পড়ুন
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ড. সুহেল আজাজ খান ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট ড. রাশদ আল আলিমির কাছে তাঁর পরিচয়পত্র পেশ করেন। প্রায় এক দশকের মধ্যে এটি ইয়েমেনে কোনও ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের প্রথম সফর। এই ঐতিহাসিক উপলক্ষ্য ভারত ও ইয়েমেনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার দিকে একধাপ এগিয়ে যায়। ইয়েমেনের প্রেসিডেন্টও ভারতের সঙ্গে ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের কথা স্মরণ করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, মোদি সরকারের এই পদক্ষেপ নিমিশা প্রিয়ার বিচারে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলেছে। নিমিশার অপরাধের কথা মাথায় রেখে সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট সর্বোচ্চ সাজা শোনালেও বা প্রেসিডেন্ট সেই আদেশে সিলমোহর দিলেও কোথাও ক্ষীণ আশা থেকেই গিয়েছিল। সুন্নি ধর্মগুরুর হস্তক্ষেপ এবং ভারত সরকারের নিরন্তর কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়ার ফলস্বরূপই প্রিয়ার ফাঁসি স্থগিত হল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নিমিশা কি ছাড়া পাবেন? তিনি কি দেশে ফিরে আসতে পারবেন? সেখানে অবশ্য অনেকগুলো প্রশ্নচিহ্ন থাকছে। তবে হাল ছাড়ছে না ভারত।

