বর্ধিত মোট্রো রেল পরিষেবার ধাক্কা লেগেছে বেসরকারি বাস-মিনিবাস এবং সরকারি বাসে। যাত্রী হারানোর আশঙ্কার মাঝেই চেষ্টা চলছে বিকল্প পথ খুঁজে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার। ইতিমধ্যে এই নিয়ে বেসরকারি বাস-মিনিবাসের সংগঠনগুলি বৈঠক করেছে। কোথাও দাবি করা হয়েছে রুটের সম্প্রসারণ, কোথাও আবার অটোর মতোই মেট্রো স্টেশন ধরানোর জন্য দাবি উঠেছে ছোট রুটের অনুমোদন।
শুধু এগুলোই নয়, অনেক রুটেই গন্তব্যে পৌঁছনোর সময়সীমা কমিয়ে যাত্রী সংখ্যা ধরে রাখা কথা উঠেছে। আবার একই সঙ্গে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাস কিংবা মিনিবার ছাড়ার সময়ের ব্যবধান কমাতে। মেট্রো রেল পরিষেবার সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকার বিকল্প পথগুলি খুঁজে বার করতে চাইছে মহানগরীর আদি গণপরিবহণগুলি।
বৃহত্তর মহানগরীতে বেসরকারি বাস পরিবহণের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ৪৫ এ রুট। কলকাতার প্রাচীনতম বাস রুটগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। এই রুটে ইউনিয়নের কমবেশি ১০০ টি বাস রয়েছে। রুটটি গড়িয়া স্টেশন এবং বেলেঘাটা বিল্ডিং মোড়ের মধ্যে (সুভাষ সরোবর পর্যন্ত অনুমতি সহ) চলাচল করে। বাসটির যাত্রাপথে পড়ে কালিকাপুর-কসবা-বালিগঞ্জ স্টেশন-ল্যান্সডাউন-জোড়া গির্জা-মৌলালি-রাজাবাজার এবং ফুলবাগান।
এখানকার ইউনিয়ন কর্তারা বলেন, তাঁরা সায়েন্স সিটি-মাঠপুকুর-চিংড়িঘাটা হয়ে বাইপাস দিয়ে উল্টাডাঙা-চিনার পার্ক এবং অবশেষে ইকো পার্ক পর্যন্ত সম্প্রসারণ চাইছেন রুটের। বাস রুটের এক অপারেটর আবার বেলেঘাটায় অরেঞ্জ লাইন এবং বেঙ্গল কেমিক্যালে গ্রিন লাইনের মধ্যে ফিডার সার্ভিস হিসেবেও কাজ করতে চান।
তবে এটি নিয়ে ট্রাফিক পুলিশ ইতিমধ্যেই আপত্তি তুলেছে । তাঁদের বক্তব্য, বাইপাসের ভিড় এবং সেখানে যানজট নিয়ন্ত্রণ রীতিমতো কঠিন কাজ। তাছাড়া চিংড়িঘাটায় ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনাও ভাল নয়। ফুলবাগান-হাওড়া মিনিবাসের সঙ্গে ২৩৯ রুটের বাসের ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ, দুই রুটের ইউনিয়নের সদিচ্ছার অভাবে সমস্যা সমাধানের পথ এখনও অধরা।
গ্রিন লাইনে মেট্রো জুড়ে যাওয়ায় হাওড়া থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত সরকারি কিংবা বেসরকারি বাস পরিষেবা কমেছে। সরকারি বাস S23A এবং S-12 তাদের নির্ধারিত পরিষেবা হ্রাস না করলেও উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি কমিয়েছে। রুট অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তনের কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য পরিবহণ বিভাগের এক কর্মকর্তা।
ফুলবাগান মিনি এবং ২৩৯ রুটের বাস উভয়ই তাদের কর্মীদের গন্তব্যে পৌঁছনোর সময় কমাতে বলেছে। বলা হয়েছে বাস -মিনিবাস ছাড়ার ব্যবধান কমাতে। নিত্য য়াত্রীদের আস্থা ফিরে পেতেই সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের এই উদ্যোগ। তবে একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গড়ালে তখন রুট পুনর্বিন্যাসের পথে তারা হাঁটবেন।
জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট, মেট্রো স্টেশনের মধ্যবর্তী যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে অটোর মতোই ফিডার পরিষেবার কথা তুলেছে। তারা ২৮, ৭১, সি-এর মতো ছোট রুটের জন্য এই ধরনের ফিডার পরিষেবা চালুর ব্যাপারে জোর সওয়াল করেছে।
